*শীঘ্রই মসলার দাম নাগালের মধ্যে চলে আসবে: মোহাম্মদ ইদ্রিস
*বাজার মনিটরিং ও অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা: ক্যাব
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: বৃহত্তর পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে দু’সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মসলার দাম কমলেও এর প্রভাব পড়েনি খুচরা মসলার বাজারে। লকডাউনের অজুহাতে বেশ চড়া দরেই বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
কোরবানি ঈদের কারণে মসলার চাহিদা বাড়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার আশায় দাম বাড়িয়েছেন– এমনটা অভিযোগ ক্রেতাদের।
নগরীর বন্দরটিলা এলাকার ‘বক্কর মসলা স্টোরে’ মশলা কিনতে আসা মঞ্জুর নাবিল বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, সামনে কোরবান আসছে। এবছর কোরবানি পশুর দাম মানুষের নাগালের বাইরে। তার উপর এখন ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়তি দরে মশলা কিনতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠবে।
শনিবার (১৭ জুলাই) নগরের পতেজ্জা, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকান ঘুরে দেখা যায়, দু’সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে দাম কমলেও খুচরায় দারুচিনি থেকে শুরু করে লবঙ্গ, এলাচ, ধনে, জিরা, হলুদ, আদা, তেজপাতাসহ সব ধরনের মশলায় মান ও প্রকারভেদে ১শ থেকে ১শ ৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জে দুই সপ্তাহ, আগে প্রতিকেজি লবঙ্গ ১ হাজার টাকায়, দারুচিনি ৩২০ টাকায়, এলাচ ২ হাজার টাকায়, গোলমরিচ ৪৮০ টাকা, ধনিয়া ৮০ টাকায় ও জিরা ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া দেশি মরিচ ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং ভারতীয় মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।
বর্তমানে, এই পাইকারি বাজারে লবঙ্গ ৯৮০ টাকা, দারুচিনি ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, এলাচ ১ হাজার ৯শ’ টাকা, গোলমরিচ ৪৪০ টাকা, জিরা ২৬০ টাকা, দেশি মরিচ ২শ টাকা, প্রতি কেজি জায়ফল ৭শ’ টাকা, কিসমিস ২শ’ টাকা, আলুর বোখরা ৪৮০ টাকা, চিনা বাদাম ১শ’ টাকা, কাঠবাদাম ৫৭০, কাজু বাদাম ৫৭০ টাকা, পেস্তাবাদাম ১২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, বাজারে লকডাউনের প্রভাব নেই। পর্যাপ্ত পণ্যের মজুদ রয়েছে। পাইকারিতে মসলার দামও কমে গেছে । পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীরাও আড়তে এসে চাহিদামত পণ্য কিনতে পারছেন। আর এখন তো গণপরিবহণ চালু হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই মশলার দাম নাগালের মধ্যে চলে আসবে।
অপরদিকে খুচরা বাজারে লবঙ্গ ১ হাজার টাকা, এলাচ ২ হাজার টাকা, দারুচিনি ৪শ’ টাকা, জিরা ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া পাইকারিতে ১৩০ টাকার রসুন খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়, শুকনা মরিচ ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৫০ টাকা বাড়তি দরে হলুদ ২২০ টাকা, দেশি আদা ২শ টাকা, বিদেশি আদা ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরের ইপিজেড এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী রহমান মিয়ে বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, কঠোর লকডাউনের সময় বাড়তি দাম ও বাড়তি গাড়ি ভাড়া দিয়ে মাল কিনতে হয়েছে। এখন লকডাউন শিথিল হলেও আগের কিনা মাল তো লোকসানে বিক্রি করতে পারি না।
এ নিয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, প্রতি বছর ঈদের আগে পাইকারি বা খুচরা পর্যায়ে সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। করোনা ও লকডাউনের কারণে সাধারণ মানুষের সব ধরনের আর্থিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, আবার অনেকের আয় কমে গেছে। এখন লকডাউন স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে। পরিবহণগত কোন সমস্যাও নেই। এই সময়েও যদি অন্যায়ভাবে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়, তা মোটেও কাম্য নয়। তাই প্রশাসনের উচিৎ— বাজার মনিটরিং করা, অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা।