*নিষেধাজ্ঞা শিথিলে খুশি যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিক
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: অফিসগামী যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বুধবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে।
বুধবার (০৭ এপ্রিল) সারাদিন দেখা গেছে, পর্যাপ্ত গণপরিবহন থাকলেও যাত্রীর তেমন চাপ নেই। অফিস টাইমে যাত্রীদের বাসের জন্য ছোটাছুটির দৃশ্য নিত্যদিনের বিষয় থাকলেও আজ যেন তার উল্টো চিত্র ছিল। সকাল থেকে বাসস্ট্যান্ডে প্রায় ঘন্টাখানেক অবস্থানের পর দেখা যায় বিভিন্ন রুটের বাসগুলো একে একে ছেড়ে যাচ্ছে। বাসের প্রতি দুই সিটে একজন করে যাত্রী থাকার কথা থাকলেও বেশ কিছু সিট ফাঁকা আছে। কয়েকটি বাসের কাউন্টারে প্রতিদিন অফিস টাইমে যাত্রীদের লাইন থাকলেও আজ বাসগুলো দাঁড়িয়ে ছিল যাত্রীর অপেক্ষায়।

সময়ে সময়ে হঠাৎ কিছু যাত্রী একসঙ্গে এলেও লাইনের দৈর্ঘ্য খুব একটা বেশি লম্বা নয়। আবার কেউ কেউ সময় রক্ষার কারণে যাত্রীর অপেক্ষা না করে খালি সিট রেখেই বাস ছেড়ে দিচ্ছেন রাস্তা থেকে যাত্রী পাওয়ার আশায়।
তবে, বাসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিল না। কিছু বাসে দাঁড়িয়ে আসা-যাওয়া করছেন যাত্রীরা।
‘সকাল থেকে বাস খালি যাচ্ছে, তেলের টাকা আর বেতন উঠবো নাকি আল্লাহই জানে।’ এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন বাসের কন্ডাক্টররা।
মেট্রো-প্রভাতী বাস কন্ডাক্টর জয়রাজ বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিচ্ছি। সকাল থেকে যাত্রীও ভালো পেয়েছি। এভাবে পরিবহনগুলো চললে, যাত্রীদের পাশাপাশি আমরাও বেঁচে যাবো। আয় না করলে খাবো কি।
যদিও, অতি উৎসাহী কিছু গণপরিবহন মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই সড়কে নেমে পড়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার আরোপিত ‘কঠোর বিধিনিষেধের’ মধ্যেই চালু হয়েছে গণপরিবহন।
ইপিজেড থেকে আগ্রবাদের উদেশ্যে রওয়ানা করা মিজনুর রহমান বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, গত দুইদিন অফিস খোলা ছিল, কিন্তু পরিবহন চলাচল না করায় অফিসে যেতে দেরি হয়ে গেছে। বাস নেই তাই সিএনজিতে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যেতে হয়েছে। বাস চালু হওয়ায় কিছুটা হলেও আমাদের ভোগান্তি কমেছে।

টেম্পু চালকের মুখে মাস্ক নেই দেখে জিজ্ঞেস করতেই মুখ ভেংচে বললো, কে ধরবো ? দরকার কি মাস্ক পরার। কোন গাড়িতেই স্প্রে কিংবা হ্যান্ড স্যানটাইজারের দেখা মিলেনি। জানালেন যাত্রীরা।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জনসাধারণের চলাচলে গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এতে বন্ধ করে দেওয়া হয় গণপরিবহন। কিন্তু বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার বুধবার(৭ এপ্রিল) থেকে সিটি কর্পোরেশনগুলোতে গণপরিবহন পুনরায় চলাচলের অনুমতি দিয়েছে।
অনুমতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব সিটি কর্পোরেশন এলাকাগুলোতে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। তবে বাইরের কোনো পরিবহন শহরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং বের হতেও পারবে না।
এর আগে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল পর্যন্ত জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া অন্য সব গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল।