Home Third Lead চরাঞ্চলে এখনও দাপিয়ে চলে গরু-মোষের গাড়ি

চরাঞ্চলে এখনও দাপিয়ে চলে গরু-মোষের গাড়ি

ফুলছড়ির চরে চলছে মোষের গাড়ি
মোঃ শাকিল মিয়া, গাইবান্ধা থেকে: একসময়ে গাইবান্ধার বাহন হিসেবে গ্রামীন মেঠোপথে দেখা যেতো গরু-মহিষের গাড়ি। কিন্তু প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দিনে দিনে তা হারিয়ে যেতে বসলেও চরাঞ্চলে এখনও দাপিয়ে চলে মহিষের গাড়ি। এখানকার মানুষের একমাত্র বাহন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এই গাড়ি।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) গাইবান্ধার নদীবেষ্টিত ফুলছড়ি উপজেলার দুর্গম বালুচরে দেখা গেছে মহিষের গাড়ি চলাচলের দৃশ্য।
অপরুপ বাংলার হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্যের ঐতিহ্যের এই গাড়ি মালামাল নিয়ে দাপিয়ে চলছিল বালুমাটিতে।
অতীতে গাইবান্ধার প্রত্যান্ত গ্রাম-গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাহন ছিল গরু বা মহিষের গাড়ি। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে সেই গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা।  সময়ের ব্যবধানে এখন এই গরুর বদলে ব্যবহার হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির গাড়ি। তবে চরাঞ্চলের গ্রামে এখনও দেখা মেলে গরু আর মহিষের গাড়ি।
এসব গাড়ি যারা চালান তাদের বলা হয় গাড়িয়াল। এখনও গ্রামবাংলার জনপদে কৃষি ফসল ও মানুষ পরিবহনের প্রিয় বাহন দুই-চাকার গরুর গাড়ি থাকলেও আধুনিকতার যান্ত্রিক ছোঁয়া আর ডিজিটাল পদ্ধতির কাছে হার মেনে বিলুপ্তপ্রায় এ পেশাটি। মাঝেমধ্যে প্রত্যন্ত এলাকায় দু-একটি গরু-মহিষের গাড়ি চোখে পড়লেও শহরাঞ্চলে একেবারেই দেখা যায় না।  শহরের ছেলেমেয়েরা দূরে থাক, বর্তমানে গ্রামের ছেলেমেয়েরাও গরুর গাড়ি শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়।
যুগযুগ ধরে কৃষকের ফসল বপন ও বহনের গুরুত্বপূর্ণ বাহন হিসেবে পরিচিত ছিল গরু-মহিষের গাড়ি। দুই চাকাবিশিষ্ট গরু বা মহিষের টানা এক প্রকার বিশেষ যান। এ যানে সাধারণত একটি মাত্র অক্ষের সাথে চাকা দুটি যুক্ত থাকে। গাড়ির সামনের দিকে একটি জোয়ালের সাথে দুটি গরু বা বলদ জুটি মিলে গাড়ি টেনে নিয়ে চলে। সাধারণত চালক বসেন গাড়ির সামনের দিকে। আর পেছনে বসেন যাত্রীরা। বিভিন্ন মালপত্র বহন করা হয় গাড়ির পেছন দিকে। কৃষিজাত দ্রব্য ও ফসল বহনের কাজে এ গাড়ির প্রচলন ছিল ব্যাপক। এই গাড়িই ছিল একমাত্র ভরসা। তবে বর্তমানে আর তেমন চোখে পড়ে না।
চরাঞ্চলের বাসিন্দা আলাউদ্দিন বেপারি  জানান, বর্তমান যুগের মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের জন্য বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাক, পাওয়ার টিলার, লরি, নসিমন-করিমনসহ বিভিন্ন মালগাড়ি। মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, সিএনজি, অটোরিকশা ইত্যাদি। ফলে গ্রামাঞ্চলেও আর চোখে পড়ে না মহিষের গাড়ি।
ফুলছড়ি চরের মহিষের গাড়ির গাড়িয়াল আলম মিয়া বলেন, এ গাড়ির একটি সুবিধা হলো, এতে কোনো জ্বালানি লাগে না, ধোঁয়া হয় না। পরিবেশের কোনো ক্ষতিও করে না। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে আমাদের প্রিয় এই গরুর গাড়ি প্রচলন আজ হারিয়ে যাচ্ছে।