মোঃ খোকন হোসেন (জাকির) জয়পুরহাট থেকে: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার দুই ব্যক্তি ভৌতিক ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার হয়ে বিনা দোষে ২২ দিন জেলহাজতে ছিলেন। এ দু’জন হলেন মহব্বতপুর সাখিদারপাড়া গ্রামের শফিউল ইসলাম (৫০) ও মঞ্জুরুল ইসলাম (২৮)। তারা সম্পর্কে জামাই শ্বশুর।
গত (২৮ ডিসেম্বর) রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেন থানা পুলিশ। জানা যায়, ওই দিন গভীর রাতে হঠাৎ ক্ষেতলাল থানা পুলিশ হাজির হন তাদের বাড়ীতে। পুলিশ তাদের দুজনের নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা নিজেদের নাম পরিচয় বলেন। পুলিশ শফিউল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলামকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর সিল ও বিচারকের সহিযুক্ত একটি ওয়ারেন্ট দেখান। এরপর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে ক্ষেতলাল থানায় নিয়ে আসেন। পরের দিন ক্ষেতলাল থানা-পুলিশ ওই দুজনকে জয়পুরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এরপর জয়পুরহাট জেলা কারাগার হতে তাদের ৭ জানুয়ারি ঢাকা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শফিউল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের পর জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারকের কাছে একটি রেফারেন্স নথি পাঠানো হয়। ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক ৭২/২০২০ নম্বর মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখতে পান জয়পুরহাট জেলার শফিউল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলাম নামের কেউ এ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি নন। তাদের নামে ইস্যুকৃত ওয়ারেন্ট জাল অথবা ভৌতিক বলে জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫ জানুয়ারি একটি আদেশের অনুলিপি ঢাকা থেকে আসে।
এরপর জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। ওই আদেশে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হতে তারা মুক্তি পেয়েছেন ।
উল্লেখ্য ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর মামলা নম্বর ৭২/২০২০-এর ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি মুলে শফিউল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ওই মামলার বাদী তাহমিনা রহমান, তিনি তার স্বামী এস এম আবদুস সামাদকে আসামি করেন। এজাহারে আসামির বাড়ি পাবনার সদর উপজেলার চরপ্রতাপপুর গ্রামে দেখানো হয়েছে। যৌতুক দাবি করার অভিযোগে তাহমিনা রহমান স্বামীর বিরুদ্ধে ওই মামলা করেছিলেন।
ভুক্তভূগী শফিউল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, কার ভুলে এমনটি হয়েছে জানিনা, তবে বিনা অপরাধে ২২ দিন জেল খেটেছি এর দায় কে নেবে ?
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নীরেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, ‘ওয়ারেন্ট মুলে শফিউল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওয়ারেন্ট ইস্যু যেভাবে করা হয় সে ভাবেই আমাদের কাছে ওয়ারেন্টের কাগজ এসেছিল।