Home চট্টগ্রাম চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের আগ্রাসী রূপ

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের আগ্রাসী রূপ

চট্টগ্রাম:চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস আবার আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হয়েছে । মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে সংক্রমণ বেড়েছে ৫৬ গুণ।
জেলার করোনা সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আজকের রিপোর্ট থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, এন্টিজেন টেস্ট, শাহ আমানত বিমানবন্দর ও নগরীর আটটি ল্যাবে গতকাল চট্টগ্রামের ১ হাজার ৯৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন ৫৫০ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ২৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৬২ জন ও ১৫ উপজেলার ১৮৮ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ৪১ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ২৭ জন, ফটিকছড়িতে ২০ জন, পটিয়ায় ১৯ জন, বোয়ালখালীতে ১৭ জন, সাতকানিয়ায় ১২ জন, সীতাকুন্ডে ১০ জন, চন্দনাইশে ৯ জন, লোহাগাড়ায় ৮ জন, রাউজানে ও বাঁশখালীতে ৬ জন করে, আনোয়ারায় ৫ জন, মিরসরাইয়ে ৪ জন, সন্দ্বীপ ও কর্ণফুলীতে ২ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ৪ হাজার ৯৭৭ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে ৭৬ হাজার ১৯৪ জন শহরের ও ২৮ হাজার ৭৮৩ জন গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল করোনায় শহর ৮ জন ও গ্রামে কোনো রোগির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৩৫ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ৭২৫ জন ও গ্রামের ৬১০ জন।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, নতুন বছরের প্রথম দিনে ১ জানুয়ারি ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে। আর সর্বশেষ গতকাল ১৫ জানুয়ারি করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৫০ জনের। ১৫ দিনের ব্যবধানে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫৫ গুণ বেশি। শুধু সংখ্যায় নয়, সংক্রমণ বৃদ্ধির হারও উদ্বেগজনক। ১ জানুয়ারি ১ হাজার ৪৮৯ টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় ৯ জনের। শনাক্তের হার ছিল ০ দশমিক ৬০ শতাংশ। ১৫ দিনের ব্যবধানে ১৫ জানুয়ারি শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে ৪৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৮৬ ও গ্রামের ১১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫৩ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৩৪ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ১৪ ও গ্রামের ১ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন কেন্দ্রে ২৫০ জনের এন্টিজেন টেস্টে শহরের ১৩৬ ও গ্রামের ১০২ জন সংক্রমিত বলে জানানো হয়।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩৬৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে শহরের ৩১ ও গ্রামের ২৮ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৭৪ জনের নমুনায় শহরের ১৩ ও গ্রামের ১৯ জন পজিটিভ হন। এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৫৩ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ২৬ ও গ্রামের ৬ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। ল্যাব এইডে ৩ টি নমুনার ৩ টিতেই জীবাণু থাকার প্রমাণ মেলে। এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১৪২ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৪ ও গ্রামের ২১ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। শাহ আমানত বিমানবন্দর ল্যাবে ৩৩৯ বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ হওয়ায় ১৫ জনের যাত্রা বাতিল করা হয়। একমাত্র মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ল্যাবে পরীক্ষিত ১৩ নমুনার সবক’টিরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
এদিকে, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ২১ দশমিক ৫৫ শতাংশ, চমেকেহা’য় ৬৪ দশমিক ১৫, চবিতে ৩৫ দশমিক ৭১, এন্টিজেন টেস্টে ৯৫ দশমিক ২০, শেভরনে ১৬ দশমিক ২১, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ১১ দশমিক ৬৮, এপিক হেলথ কেয়ারে ৬০ দশমিক ৩৭, ল্যাব এইডে শতভাগ, এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১৭ দশমিক ৬০ এবং শাহ আমানত বিমানবন্দর ল্যাবে ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে, মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ল্যাবে ০ শতাংশ সংক্রমণ নির্ণিত হয়।

-সূত্র: বাসস