বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: বৈরী আবহাওয়া, অনাবৃষ্টি ও শ্রমিক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সিলেটে কমেছে চায়ের উৎপাদন। এছাড়া বাজারে চায়ের দাম কমে যাওয়ায় বাগান মালিকরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। এতে চা উৎপাদনে ভাটা পড়েছে।
বাগানমালিক, ব্যবসায়ীরা বলেছেন, উৎপাদন আশানুরূপ না হলেও দেশে চায়ের ঘাটতি হবে না। কারণ, গত বছরে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে। রপ্তানির পর উদ্বৃত্ত থাকা চা দিয়ে ঘাটতি পূরণ করা যাবে। ফলে উৎপাদন কিছুটা কমলেও আমদানি করতে হবে না।
বাংলাদেশ চা বাগান মালিক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, ২০২৪ সালে দেশের চা বাগানগুলোতে অনেক সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে। ক্রমাগত লোকসানের কারনে অনেক চা বাগানের কারখানা দিনের পর দিন বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকের মজুরি দিতে না পারায় এনটিসির ১২টি বাগান তিন মাসের মত বন্ধ ছিল। টাকার অভাবে অনেক বাগান মালিক বাগানে সময় মত প্রয়োজনীয় সার কীটনাশক প্রয়োগ করতে পারেনি। এছাড়া ২০২৪ সালে বৃষ্টি হয়েছে তুলনামূলক বেশি।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে গেল বছর চা বাগানে আশানুরূপ উৎপাদন হয়নি। সমস্যা লেগেই ছিল। এ বছর নিলাম প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ২১০টাকা ৫৬ পয়সা। গত বছর ছিল ১৯২ টাকা। সরবরাহ কমে যাওয়ায় চায়ের দাম এবার কিছুটা বেড়েছে। গত বছর এক কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ছিল ২২৬ টাকা। এ বছর চা সংশ্লিষ্ট সব উপকরণের দাম বাড়ার কারনে খরচ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
উৎপাদনের মৌসুমে দেশের অন্যতম ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসির) ১২টি চা বাগান বন্ধ ছিলো। মজুরি না পেয়ে এসব বাগেনের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেন প্রায় তিন মাস। এর প্রভাব পড়েছে দেশের জাতীয় চা উৎপাদনে। এছাড়া টাকার অভাবে সব বাগানে সময়মতো সার দিয়ে পরিচর্যা না করতে পেরে গত বছরের চেয়ে উৎপাদন কমেছে। চা চাষের জন্য প্রয়োজন পরিমিত বৃষ্টি কিন্তু তুলনামূলক ভাবে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় চা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে।
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা সাড়ে ৯ কোটি কেজি। যে পরিমাণ চা পাতা বাগানে উৎপাদিত হবে দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।সিলেট, মৌলভীবাজার হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম মিলে দেশে ছোট বড় ১৬৯ চা বাগানে রয়েছে। তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী জানান, নানা কারণে সিলেটে এবার চায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বৈরী আবহাওয়া ও অনাবৃষ্টির কারণে আশানুরুপ ফলন হচ্ছেনা। শ্রমিক আন্দোলনে সময় মতো চা উত্তোলন না হওয়ায় পাতা বিনষ্ট হয়েছে। সবমিলিয়ে এবছর সিলেটে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছেনা।