বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
চা রপ্তানিতে বিপুল ধাক্কার মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত! ২০২১ সালের প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, এই বছরেই কার্যত ৩ থেকে ৪ কোটি কেজি রফতানি কমবে চা এর। ফলত বিপুল মন্দার মুখোমুখি হতে চলেছে দেশ। চা ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রফতানিকৃত পণ্য। সেই পণ্যে এই পরিমাণ মন্দা দেশকে বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দেবে এমনটাই মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারের ভারতের চা রফতানির এমন হাঁড়ির হালের কারণ কী? বিশেষত ভারতের মত দেশ যেখানে সারা বিশ্বে চা রফতানিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন– এর কারণ তিনটি। ১) বিশ্বজোড়া কোভিড মহামারীর প্রাদুর্ভাব, ২) আন্তর্জাতিক স্তরে স্বল্প দামের চায়ের উৎপাদন ও ৩) আমদানিকারক দেশগুলিতে আমদানির উপর ক্রমাগিত নিষেধাজ্ঞা। এই তিনটি কারণের জন্যেই চা রফতানি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে পড়ছে ভারত।
অতিমারির ফলে সারা বিশ্ব জুড়েই যে বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য রফতানি শিল্প ব্যপকভাবে মার খেয়েছে। ২০১৯ সালের তুলমায়, এই বছর রফতানি কমেছে ২৯.০৩%।২০২০সালের তুলনায় রফতানি কমার হার ১৩.০৩ %। ভারতের বাজার থেকে যে চা আসে, সেই চা এর মূল্য নিজের দেশে তৈরি চা এর মূল্যের তুলনায় অনেকবেশি। ফলত আমদানিকারক দেশগুলি খরচা বাঁচাতেই, ভারতের বাজারে তৈরি চা এর তুলনায় নিজেদের দেশজ চা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কতটা ক্ষতি হয়েছে রফতানির? ইন্ডিয়ান টি বোর্ড-এর বক্তব্য অনুযায়ী ২০২১ সালের প্রথম তিন মাসে চা রপ্তানির পরিমাণ ৪.৮৬ কোটি কেজি। ২০২০ সালে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল৫.৮৫কোটি কেজি। ২০১৯সালে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬.৬২কোটি কেজি। অর্থাৎ, কোভিড পূর্ববর্তী সময়ের থেকে বেশ দ্রুততার সঙ্গে নামছে চা রফতানির পরিমাণ।
একইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরেও চা নিয়ে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। চা উৎপাদনে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি। উৎপাদনের ক্ষেত্রে উত্তর ভারতের পারফরম্যান্স অনেকটা বেটার। যদিও দুই অঞ্চলের ক্ষেত্রেই চা এর উৎপাদন পূর্ববর্তী বছরগুলো থেকে পড়ে গিয়েছে। উত্তর ভারতের ক্ষেত্রে উৎপাদনের পরিমাণ ২০১৯ সালের তুলনায় ৩১.০৪% কমেছে। ২০২০ সালের তুলনায় এই চা উৎপাদনের পরিমাণ ১৭.০৩ % কমেছে।