Home Second Lead চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ চালুর তোড়জোড়

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ চালুর তোড়জোড়

  • বিজয় দিবসে  ভার্চুয়াল উদ্বোধন 

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: আর মাত্র দু’সপ্তাহ মাঝখানে। এরপর চালু হচ্ছে প্রায় পাঁচ দশকের অধিক সময় ধরে বন্ধ থাকা চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ। এখন চলছে সেই প্রস্তুতি। বিজয় দিবসে চালু হচ্ছে এই পথ।

চিলাহাটি বাংলাদেশের নিলফামারিতে এবং হলদিবাড়ি ভারতের কোচবিহারে। রেলপথের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করে পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের কাজও সম্পন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি ১৬ ডিসেম্বর এই পথে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের শুভ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার ( ১ ডিসেম্বর )  দুপুরে নির্মিয়মান হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ উদ্বোধনের প্রাকমুহূর্তে নব-নির্মিত রেলরুট, প্রতিবেশী দুই দেশের রেলপথ সহ রেলের যাবতীয় অবকাঠামো পরিদর্শনে সস্ত্রীক হলদিবাড়িতে যান  ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহম্মদ ইমরান । শিলিগুড়ি থেকে সড়ক পথে হলদিবাড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছেন তিনি। স্টেশনে প্রবেশের মুখে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের এডিআরএম সুরেশকুমার শর্মা। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের  নিয়ে স্টেশন চত্বরটি ঘুরে দেখেন। তারপর রেলের বিশেষ ট্রলি করে সীমান্তে পৌঁছান তাঁরা। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত বিএসএফ ও রেলের কর্মকতাদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করেন।

উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের ডিআইজি (জি) রাজীবরঞ্জন শর্মা,  বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের ৫৬ ব্যাটালিয়নের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মামনুল হক, পশ্চিমাঞ্চল রেলের চিলাহাটি রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবদুর রহীম প্রমুখ। এরপর নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা থেকে বিশেষ গ্যাংকার ট্রলিতে চিলাহাটি স্টেশনে আসেন। বিকেলে সীমান্ত পেরিয়ে একই পথে হলদিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

হাইকমিশনার  মুহম্মদ ইমরান বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলার সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্ক। এই রেলরুটের মাধ্যমে যা আরও গভীর হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন সুবিধায় দুই দেশের চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি ১৬ ডিসেম্বর পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের শুভ উদ্বোধন করবেন। এতে উভয় দেশ উপকৃত হবে। দুই দেশের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য বাড়বে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণ সহ সীমান্তবর্তী সব ধরনের সমস্যা-সম্ভাবনা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও স্থলবন্দরগুলো পরিদর্শন করছি। সংগৃহীত তথ্য দুই দেশের সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে। বুধবার ( ডিসেম্বর ) চ্যাংরাবান্ধা-বুড়িমারী স্থলবন্দর পরিদর্শন করবেন তিনি।

প্রায় ৫৫ বছর পর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যেকার আন্তর্জাতিক চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ আবারও চালু হচ্ছে। প্রথমে মালবাহী গাড়ি চালানো হবে। পরবর্তীতে চালানো হবে যা্রতী । পুরাতন এই রেল রুটটি ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৪৭ সালের আগস্টে পাক-ভারত বিভক্তের পরও এপথে রেল চলাচল চালু ছিল। সে সময়ে এ পথে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করতো যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর বন্ধ হয় দুই দেশের মধ্যে রেল চলাচল। বন্ধ থাকা পথটি চালু করতে ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয় বর্তমান সরকার।

প্রকল্পটির মধ্যে রয়েছে চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ ও দুই দশমিক ৩৬ কিলোমিটার লুপলাইন নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামো।