Home তথ্য প্রযুক্তি দুনিয়া বদলে দেয়া চ্যাটজিপিটি-৪

দুনিয়া বদলে দেয়া চ্যাটজিপিটি-৪

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

মাত্র চার সপ্তাহ আগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা ওপেনএআই বাজারে এনেছে চ্যাটজিপিটি। এই চ্যাটবট আক্ষরিক ভাবে বদলে দিয়েছে দুনিয়াকে। ওই সংস্থা এখন চ্যাটজিপিটির পরবর্তী সংস্করণ জিপিটি-৪ নিয়ে এসেছে এবং এটি ইতিমধ্যেই বাজার সরগরম করে তুলেছে। এই চ্যাটবট নিয়ে বিশ্বজুড়ে ঝড় উঠেছে। এখন জোরালো আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে, এই চ্যাটবট কীভাবে আন্তর্জাতিক কাজের বাজারে অন্তিম দিন ঘনিয়ে তুলছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিচ্ছে এবং বড় বড় ব্যাঙ্ক থেকে অ্যাপ নির্মাণকারী–এমন লক্ষ লক্ষ ইউজারদের কাছে টেনে নিচ্ছে। এখন বলা হচ্ছে যে, এর পরবর্তী সংস্করণ আরও শক্তিশালী এবং এটা নিশ্চিত যে, নয়া চ্যাটবট বিশ্বে আরও বৃহৎ ঢেউ তুলবে।

ওপেনএআই সংস্থার কথা অনুযায়ী, চ্যাটজিপিটির চেয়ে আরও অনেক জটিল কাজ করতে সক্ষম জিপিটি-৪। অনেক জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে এটি সক্ষম।

চ্যাটজিপিটি-৪ কী?

জেনারেটিভ পার্ট্রেন্ড ট্রান্সফর্মার ৪-কে সংক্ষেপে বলা হচ্ছে জিপিটি-৪। ওপেনএআই সফটওয়্যারের এটি চতুর্থ উদ্ভাবন যা ইন্টারনেটে থাকা বিপুল তথ্যভাণ্ডারকে বিশ্লেষণ করতে পারে। মানুষের মতোই প্রায় লেখা তৈরি করা থেকে ব্যবহারকারীদের দিতে পারে অজস্র প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর।

পূর্বের সংস্করণের চেয়ে চ্যাটজিপিটি-৪ কতখানি আলাদা?

বাজারে এ নিয়ে উত্তপ্ত আলাপ-আলোচনা চললেও চ্যাটজিপিটির যে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা সুপরিচিত। ব্লুমবার্গ রিপোর্ট করেছে, এই চ্যাটবট ‘বেঠিক উত্তর দেয়, পক্ষপাতদুষ্ট ও মন্দ আচরণ করে’। এমন সব অভিযোগ রয়েছে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে। ওপেনএআই জানিয়েছে, নতুন সফটওয়্যারকে আরও নিরাপদভাবে বানাতে তারা গত ছয় মাস ধরে কাজ করেছে। তাদের দাবি, চ্যাটজিপিটি আরও যথাযথ, সৃজনশীল এবং আগের সংস্করণটির চেয়ে অনেক বেশি সমন্বয়ী। তথ্যগত উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘৪০ শতাংশ’ বেশি কার্যকর।

চ্যাটজিপিটিতে রয়েছে ‘মাল্টিমোডাল প্রযুক্তি’। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শব্দ-বাক্যের সঙ্গে ছবিকেও সামলাতে পারে। ব্লুমবার্গের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, লেখার পাশাপাশি ছবিও দিতে পারবে ব্যবহারকারীরা এবং এই দুই উপাদানই প্রক্রিয়াকরণ ও তা নিয়ে আলোচনা করতে পারবে চ্যাটজিপিটি-৪। এই প্রযুক্তিতে ভিডিও দেওয়াও যাবে।

সীমাবদ্ধতা

২০২১ সালের আগের তথ্য দিয়ে একে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। সাম্প্রাতিক ঘটনাবলির যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা দিতেও অপারগ চ্যাটজিপিটি-৪। এক ব্লগ পোস্টে ওপেনএআই জানিয়েছিল, বর্তমান সংস্করণেও ‘কিছু চেনা সীমাবদ্ধতা রয়ে গিয়েছে এবং এগুলি সমাধান করতে আমরা চেষ্টা করছি। সামাজিক পক্ষপাতদুষ্টতা, হ্যালুসিনেশন ও প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠার প্রবণতা ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে।”

কীভাবে ব্যবহার করতে হয় চ্যাটজিপিটি-৪?

ওপেনএআই-তে সাইন আপ করে প্রাথমিক চ্যাটজিপিটির ব্যবহার শুরু করা যেতে পারে। তবে, কিছু কিছু দেশ ও অঞ্চলের জন্য বিধিনিষেধ রয়েছে। বর্তমান সংস্করণটি এখন ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে চ্যাটজিপিটি প্লাস ভোক্তাদের। মাসে ২০ ডলারের মূল্যে। এখন এদের প্রতীক্ষা-তালিকায় যোগ দেওয়া যাবে। ব্লুমবার্গের মতে, ভবিষ্যতে এটি পাওয়া যাবে মাইক্রোসফটের সার্চ ইঞ্জিন, বিং প্রভৃতিতে। এখন আপনি যদি বিং-এর ওয়েবপেজে যান এবং ‘চ্যাট’ বোতামে ক্লিক করেন তাহলে আপনাকে এক ওয়েবপেজে নিয়ে যাওয়া হবে এবং প্রতীক্ষা-তালিকায় সাইন আপ করতে বলা হবে। সবার ব্যবহারের সুযোগ ধীরে ধীরে দেওয়া হবে।

এর পর কী?

মাইক্রোসফট কর্প ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায় ওপেনএআইওতে। এমনটাই জানিয়েছে ব্লুমবার্গের রিপোর্ট। অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থাও এই নয়া উদ্যোগে শামিল হতে চাইছে। অ্যালফ্যাবেট আইএনসির গুগল ইতোমধ্যেই তাদের নিজস্ব এআই পরিষেবা চালু করেছে। এর নাম বার্ড। এটি পরীক্ষামূলক ভাবে বাজারে আনা হয়েছে।

এ দিকে, বেশ কয়েকটি নতুন উদ্যোগী সংস্থা ধাওয়া করেছে এআই রথকে। চিনে বাইদু আইএনসি প্রকাশ করতে চলেছে তাদের নিজস্ব বট আর্নি। আবার, মিচুয়ান, আলিবাবা ও আরও কয়েকটি ছোট সংস্থা এই গড্ডলে গা ভাসাতে উৎসাহী হয়েছে।