Home First Lead জট নিরসনে বন্দরের সাফল্য আশাতীত

জট নিরসনে বন্দরের সাফল্য আশাতীত

                                ১৩ জুন ২০২০   ১৩জুন ২০১৯

  • অপেক্ষমান কন্টে. জাহাজ    ০৯               ১৭
  • বন্দরে  কন্টে. জাহাজ         ০৯               ০৯
  • কন্টেইনার( টিইউস)    ৪০,৫৩২         ৪০,২১৪

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: কন্টেইনার ও জাহাজজট নিরসনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আশাতীত সাফল্য অর্জন করেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে তা এক বছর আগের চেয়ে ভাল অবস্থায়।

কন্টেইনার ও জাহাজ জটের নজিরবিহীন সংকটে পড়েছিল বন্দর। তাতে একেবারে অচলাবস্থা তৈরি হয়। করোনাভাইরাস রোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে ডেলিভারি না থাকায় সমস্যা তৈরি হয় বন্দরে। কন্টেইনার নিয়ে আসা জাহাজকে বহির্নোঙরে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষমান থাকতে হয়েছে। জেটিতে জাহাজ থেকে কন্টেইনার নেমেছে একেবারে ধীরগতিতে। ইয়ার্ডের সবখানে ছিল ভর্তি। তাই জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামিয়ে রাখার জায়গা ছিল না।

বন্দরে কন্টেইনার রাখার সক্ষমতা  ৪৯,০১৮ টিইউসের। তা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। অপরদিকে, প্রতিদিন প্রায় ৩০টি জাহাজকে কন্টেইনার নিয়ে বহির্নোঙরে অপেক্ষায় থাকতে হতো। সংকট কাটাতে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠকও হয়েছে দফায় দফায়। তাতে তেমন সুফল আসেনি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সংকট নিরসনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ( এনবিআর )এর । ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য অফডকসমূহে সংরক্ষণ ও সেখান থেকে ডেলিভারির অনুমোদন ছিল। এনবিআর সব রকমের আমদানি পণ্যের কন্টেইনার অফডকসমূহে সংরক্ষণ, আনস্টাফিং ও ডিপো থেকে খালাসের অনুমোদন দেয় সাময়িকভাবে। তা শেষ হবে আগামী ৩০ জুন।

এনবিআর-এর এই সিদ্ধান্তের পর বন্দর থেকে কয়েকদিনের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার টিইউস কন্টেইনার নিয়ে যায় অফডকসমূহ। বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানি পণ্য ভর্তি কন্টেইনারে শতভাগ স্টোররেন্ট মওকুফ করে কয়েক দফায়। সাধারণ ছুটিতেও ট্রাফিক বিভাগ রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করে।

কন্টেইনার ডেলিভারি জোরদার হওয়ায় জাহাজের গড় অবস্থানকাল কমেছে। কম সময়ের মধ্যে কন্টেইনার খালাস করে ফিরে যেতে পারছে জাহাজ। ভিড়ার জন্য জাহাজের অপেক্ষার সময়ও কমেছে।

শনিবার ১৩ জুন অপেক্ষমান কন্টেইনার জাহাজের সংখ্যা ৯টি । আর বার্থে ৯টি থেকে একযোগে কন্টেইনার খালাস চলছে। বন্দরে কন্টেইনার রয়েছে ৪০,৫৩২ টিইউস।

অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, বন্দর অচলাবস্থা কাটিয়ে কেবল বর্তমান অবস্থায় এসেছে তা নয় এক বছর আগের তুলনায়ও ভাল অবস্থায়। ২০১৯ সালের ১৩ জুন বহির্নোঙরে কন্টেইনার জাহাজ অপেক্ষায় ছিল ১৭টি। বার্থে ছিল ১১টি। বন্দরে কন্টেইনার ছিল ৪০,২১৪ টিইউস।

শনিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বন্দর থেকে ডেলিভারি নেয়া হয়েছে ৩৬৬৪ টিইউস। এগুলোর মধ্যে ৫০৪ টিইউস খালি কন্টেইনারসহ মোট ১৮০২ টিইউস নিয়েছে অফডকগুলো। বাকিটা সরাসরি ডেলিভারি।

বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা করছেন যে আমদানিকারকরা তাদের পণ্য আরও দ্রুত ডেলিভারি নেবেন। তা হলে অবস্থার উন্নতি হবে আরও।

সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তা অভিমত দেন যে শিপিং লাইনের ডেমারেজ/ডিটেনশন চার্জ মহাসংকটে ফেলেছে আমদানিকারকদের। তা না হলে বন্দরের জট নিরসন আরও দ্রুততর হতো।

ডিজি (শিপিং) এর এক সার্কুলারে আমদানিপণ্যের কন্টেইনারে কোন শিপিং ডেমারেজ আদায় করা যাবে না এবং আদায় করা ডেমারেজ ফেরত দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সাধারণ ছুটির সময়ে কন্টেইনারে কোনরূপ ডেমারেজ ও ডিটেনশন চার্জ আরোপ না করার সুপারিশ করে অধিদপ্তর ২৯ এপ্রিল সার্কুলার জারি করে।

মার্সক বাংলাদেশ লিমিটেড সার্কুলারের প্রেক্ষিতে ৫০ ভাগ চার্জ মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে । ২২ মে এক পত্রে তাদের কাস্টমারদের জানিয়েছে ২৬ মার্চ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সময়ে কন্টেইনার ডিটেনশন চার্জ ৫০ ভাগ মওকুফ করা হয়েছে। যারা শতভাগ চার্জ পরিশোধ করে পণ্য খালাস নিয়েছে তাদের বাড়তি চার্জ সমন্বয় করা হবে বা ফেরত দেয়া হবে। কনসাইনিদের সাথে তাদের যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সেখানে বিষয়টি সংশোধন করা হবে বলে উল্লেখ করেছে মার্সক লাইন।