Home Second Lead জলোৎসবে শেষ হলো রাঙামাটিতে বৈসাবি উৎসব

জলোৎসবে শেষ হলো রাঙামাটিতে বৈসাবি উৎসব

রাঙ্গামাটি থেকে শাকিল মন্ডল: মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই জলোৎসবের মাধ্যমে রাঙামাটিতে শেষ হয়েছে বৈসাবি উৎসব। শেষদিন জলকেলিতে মেতে উঠে মারমা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা। পুরোনো বছরের সকল দুঃখ, কষ্ট, বেদনাকে ভুলে গিয়ে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে একে অন্যকে পানি ছিটিয়ে শুদ্ধ করে নিলেন মারমা তরুণ-তরুণীরা। শনিবার সকালে রাঙামাটি কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) এর কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী এই জলকেলি বা পানি উৎসবে মারমা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠে।
পানি উৎসবে মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাপতি অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি। এতে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ।
আলোচনা সভায় দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য সরকারের অনেক কিছুই করার আছে, আর সেই অনেক কিছু কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং পাহাড়ের জনগণের জন্য খুবই আন্তরিক। নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি রক্ষা ও বিকাশে সরকারের নানান পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বছরের প্রথম দিন বাংলাদেশের সকল মানুষেরা নববর্ষে মেতে উঠে। কিন্তু পার্বত্য এলাকায় দেখা যায় একটু ভিন্ন রূপ। এখানকার মানুষেরা অনেক দিনব্যাপি এই উৎসব পালন করে। কারণ এই দিনকে ঘিরে এখানকার জনগোষ্ঠীগুলোর প্রধান উৎসব হয়ে থাকে। ধারাবাহিকভাবে পাহাড়ের মানুষ আনন্দা ও উল্লাসে বিজু, বৈসুক, বিহু, বিশু এবং সাগ্রাই উৎসব পালন করছে।
মারমা সংস্কৃতি সংস্থা(মাসস) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, সংস্কৃতি ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশের লক্ষ্যে প্রতিবছর এই আয়োজন। সাংগ্রাই উৎসবের মাধ্যমে মারমা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়। যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে পারে।
আলোচনা সভা শেষে অতিথিগণ ঘণ্টা বাজিয়ে জলকেলি উদ্বোধন করেন। এরপর সকলে একে-অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে সকল অবসাদ দূর করে দেয়। জলকেলি অনুষ্ঠানের পর মারমা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহি গান ও নাচ পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে আগত কয়েক হাজার মারমা নারী-পুরুষ একে-অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে উৎসব পালন করতে থাকে।