Home Uncategorized জাতির গৌরব ও অহংকার চট্টগ্রাম বন্দর

জাতির গৌরব ও অহংকার চট্টগ্রাম বন্দর

জাতির গৌরব ও অহংকার, অর্থনীতির স্বর্ণদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর।

১৮৮৭ সালের ২৫ এপ্রিল তৎকালীন ব্রিটিশ-ইন্ডিয়া সরকারের পোর্ট কমিশনারস এক্ট প্রণয়নের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় চট্টগ্রাম বন্দরের। দেশের মোট জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার (জিডিপি) যেখানে ৬ থেকে ৭ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১ শতাংশ। দেশের আমদানি-রপ্তানির ৯২ শতাংশ পরিবাহিত হয় এ বন্দরের মাধ্যমে।

নানা সমস্যা এবং সংকট সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর, উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি হচ্ছে। প্রতিবছর রেকর্ড হচ্ছে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হামবুর্গ পোর্ট কন্সালটিং চট্টগ্রাম বন্দরকে ২০১৬ সালে ১৯ লাখ ৫৬ হাজার টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে হবে বলে উল্লেখ করেছিল তাদের সমীক্ষা প্রতিবেদনে। কিন্তু এক বছর আগে ২০১৫ সালে বন্দর ২ বিলিয়ন টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে এই ধারণাকে ছাড়িয়ে যায়। হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২৩,৪৬,৯০৯ টিইইউস। আর গত বছরে এই সংখ্যা ছিল ২৫,৬৬,৫৯৭ টিইইউস। গত বছর কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে প্রায় ৯ দশসিক ৩৬ শতাংশ। কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। বেড়েছে বন্দরে জাহাজ আসার সংখ্যাও। অবশ্য, কন্টেইনার জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ে ব্যাপক সফলতা থাকলেও জেনারেল কার্গো জাহাজ হ্যান্ডলিং বছরে বছরে পিছিয়ে।  প্রত্যাশিত সফলতা আসছে না। আমদানিকারকদের দুর্দশার শেষ নেই।

সরকারের রূপকল্প-২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর এবং ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে বন্দর। আধুনিক যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ করার জন্য রয়েছে পরিকল্পনা। রয়েছে আগামী দিনের বিশাল চাহিদা পূরণে বে টার্মিনাল, লালদিয়া বাল্ক টার্মিনাল, কর্ণফুলী কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণসহ অনেক কর্মসূচি। সীতাকু- ও মিরেরসরাইয়ের মধ্যখানে বন্দর সুবিধা তৈরি করা হবে। আনোয়ারা ও মিরেরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে বন্দর সুবিধার চাহিদা বেড়ে যাবে বহুগুণে।

ইতিহাসবিদদের মতে, ইংরেজ শাসনের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সেলামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে কাঠের জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মিত হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়। ১৮৮৮ সালে বন্দরে দু’টি মুরিং জেটি নির্মিত হয়। এই বছরের ২৫ এপ্রিল পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। ১৮৯৯-১৯১০ সালের মধ্যে পোর্ট কমিশনার ও আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে রেলওয়ের সংযোগ সাধিত হয়। ১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। ১৯৬০ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনারকে চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্ট-এ পরিণত করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পোর্ট অথরিটি’তে পরিণত করা হয় চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্টকে।