জিনের বদলে আরও ভয়ঙ্কর হয়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। সাধারণ করোনার থেকে এর বিষ অনেক বেশি। ‘জেনেটিক্যালি মডিফায়েড’ এই করোনাভাইরাসের জন্মদাতা উহানের বায়োসেফটি ল্যাবোরেটরি লেভেল ফোর। আর এই কথা আগে থেকেই জানত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। আন্তর্জাতিক একটি সাংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন মার্কিন আইনজীবী, রাসায়নিক মারণাস্ত্র বিরোধী সংগঠনের অন্যতম সদস্য ড. ফ্রান্সিস বয়েল।
শক্তিশালী রাসায়নিক মারণাস্ত্র করোনাভাইরাস, ছড়িয়েছে উহানের ল্যাব থেকেই
ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়েস কলেজের আইনের অধ্যাপক ড. ফ্রান্সিস বয়েল। রাসায়নিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ সংগঠনেরও অন্যতম মাথা তিনি। তাঁর উদ্যোগেই ১৯৮৯ সালে ‘বায়োলজিক্যাল ওয়েপনস অ্যান্টি-টেররিজম অ্যাক্ট’-এর বিল পাশ হয়। নোভেল করোনাভাইরাস যে নিছকই কোনও ভাইরাসের সংক্রমণ নয়, সে বিষয়ে আগেও মুখ খুলেছিলেন ডঃ ফ্রান্সিস। ইজরায়েলি গোয়েন্দা ও মাইক্রোবায়োলজিস্টদের দাবির সমর্থন জানিয়েই ড. ফ্রান্সিস বয়েল বলেন, উহানের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির বায়োসেফটি লেভেল ফোর ল্যাবোরেটরিতে অতি গোপনে রাসায়নিক মারণাস্ত্র বানানোর প্রক্রিয়া চলছে। সেখান থেকেই ছড়িয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। সি-ফুড মার্কেটের ব্যাপারটা নেহাতই চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা। আর এই কথা বিলক্ষণ জানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সব জেনেও গোটা বিষয়টাকে ধামাচাপা দেওয়ার কৌশলী চেষ্টা চলছে।
ড. ফ্রান্সিস বয়েল বলেছেন, উহানের এই বায়োসেফটি লেভেল ফোর ল্যাবোরেটরিকে সুপার ল্যাবোরেটরির তকমা দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বলা হয়েছিল, এই ল্যাবে ভাইরাস নিয়ে কাজ হলেও তা অনেক বেশি সুরক্ষিত ও নিরাপদ। ল্যাবোরেটরির জন্যই রয়েছে আলাদা উইং যার বাইরের পরিবেশের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। ড. ফ্রান্সিস বলেন, সার্স ও ইবোলা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার পরে অভিযোগের আঙুল ওঠে এই গবেষণাগারের দিকেই। রোগ প্রতিরোধ নয়, বরং প্রাণঘাতী জৈব অস্ত্র বানাতেই মত্ত গবেষকরা। যারই পরিণতি হাজার হাজার মৃত্যু। নোভেল করোনাভাইরাসের জিনগত বদল ঘটানো হয়েছে এবং উহানের এই ল্যাবোরেটরি থেকেই যে ভাইরাস ছড়িয়েছে সেটাও জানেন হু-এর অনেক গবেষকই।
কানাডার ল্যাব থেকে করোনা চুরি করেছে চিন, তারই জিনগত বদলে তৈরি হয়েছে নোভেল করোনা
নোভেল করোনাভাইরাস যে রাসায়নিক মারণাস্ত্র, নিশ্চিত করেছেন মার্কিন সেনেটর টম কটনও। তাঁর দাবি, চিন জীবাণুযুদ্ধের জন্য বানাচ্ছিল ওই ভাইরাস। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কথাটা লুকোতে চাইছেন কারণ আন্তর্জাতিক আইনে জীবাণুযুদ্ধ নিষিদ্ধ। তাঁরা ওই নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছিলেন জানাজানি হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। ২০১৫ সালে রেডিও ফ্রি এশিয়া তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে ভয়ঙ্কর, প্রাণঘাতী সব ভাইরাস নিয়ে কাজ করছেন গবেষকরা। এর অর্থ জৈব রাসায়নিক মারণাস্ত্রের দিকে ক্রমশ ঝুঁকছে বেজিং।
পরবর্তীকালে ইজরায়েলি সেনা গোয়েন্দা দফতরের প্রাক্তন প্রধান লেফটেন্যান্ট ড্যানি শোহাম বলেছিলেন, বায়ো-ওয়ারফেয়ারের জন্য তৈরি হচ্ছে চিন। জিনের কারসাজিতে এমন ভাইরাস তৈরি করা হচ্ছে যার প্রভাব হবে সাঙ্ঘাতিক। প্রতিরোধের আগেই মহামারীর চেহারা নেবে এইসব ভাইরাসের সংক্রমণ। যে দেশের উপর আঘাত হানা হবে, সেখানে মৃত্যুমিছিল শুরু হয়ে যাবে। টম কটনের দাবি, উহানের সি-ফুড বাজারের কথাটা চিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্য রটিয়ে দেয়। কারণ প্রশাসন বুঝতে পেরেছিল যে নিজেদের বানানো মারণাস্ত্রে তারা নিজেরাই কুপোকাৎ।
নোভেল করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়িয়েছে সেই নিয়ে আরও একটি বিস্ফোরক দাবি করেছেন ‘অরিজিন অব দ্য ফোর্থ ওয়ার্ল্ড ওয়ার’-এর লেখক জে আর নিকিস্ট। তাঁর দাবি, কানাডার পি৪ ন্যাশনাল মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবোরেটরি থেকে করোনাভাইরাসের স্যাম্পেল চুরি করেছে বায়োসেফটি ল্যাবের এক গবেষক। উইন্নিপেগের পি৪ ন্যাশনাল মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে নিত্য যাতায়াত ছিল ওই গবেষকের। সেখান থেকেই ভাইরাসের নমুনা চুরি করে উহানের ল্যাবোরেটরিতে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এনওসিভি ভাইরাসের জিনের বদল ঘটিয়েই তৈরি হয়েছে ২০১৯-এনওসিভি। কানাডার ল্যাবের সেই গবেষক যাঁর সঙ্গে উহানের ল্যাবের যোগসূত্র ছিল সেই ফ্র্যাঙ্ক প্লামারের মৃত্যু হয়েছে রহস্যজনকভাবে।
উহানের বায়োসেফটি ল্যাবের ১২ জন গবেষকের মধ্যে দু’জন রয়েছে সন্দেহের তালিকায়। অনুমান করা হচ্ছে, জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ওই ভাইরাস তাদের হাত থেকেই কোনওভাবে লিক হয়ে গেছে উহানের বায়োসেফটি ল্যাব থেকে। অভিযোগ আরও আছে। বায়োসেফটি ল্যাবেই নাকি বাদুড় ও মানুষের মধ্যে সংক্রামক রোগ ছড়ায় এমন জীবাণু নিয়ে গবেষণা চলে। কীভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চোখ এড়িয়ে কোনও ল্যাবে এমন সংক্রামক জীবাণু নিয়ে গবেষণা চলতে পারে সেই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে, টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ, দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস এবং একাধিক মার্কিন গবেষণা সংস্থা।
দি ওয়াল প্রতিবেদন