নাজমুল হোসেন
চট্টগ্রাম: বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জুতা তৈরির ছোট কারখানাগুলো।
জুতা তৈরির ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলোর বেশিরভাগই নগরীর মাদারবাড়ি এলাকার মহব্বত গলি ও নসু মালুম লেইনে। এখান থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় জুতা তৈরি করে সরবরাহ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহের পাশাপাশি খুচরা ক্রেতাদের জন্য জুতা তৈরি করা হলেও এখন তা আর নেই। জুতা তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে, বেড়েছে কর্মীদের মজুরি। তাতে খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই অনুপাতে পাইকারি বাজারে দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
এখানে জুতার কারখানা ছাড়াও ১শ মতো দোকান রয়েছে বিভিন্ন উপকরণের।
জুতা কারখানার কয়েকজন মালিক জানালেন, আগে জমজমাট ব্যবসা হলেও এখন তা নেই। সারাদিনে দু’হাজার টাকার বিক্রি হয় না। আবার কোন কোন কারখানা মোটেও বিক্রি করতে পারে না।
কারিগর মো. ফয়েজ জানান, জুতা তৈরির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কারখানায় নিয়োজিত অনেক কর্মী কাজ হারিয়েছেন। চাহিদা না থাকায় বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যেগুলো টিকে আছে সেগুলো কোন রকমে চালু রয়েছে।
নগরীতে পাঁচ শতাধিক ছোট ছোট জুতার কারখানা থাকলেও আর্থিক সংকটে ৬০% কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে শ’ দুয়েক কারখানা চালু রয়েছে।
এর মধ্যে বর্তমানে ২’শ মতো কারখানা চলমান থাকলেও ক্রেতাদের চাহিদা না থাকায় সেগুলোও বন্ধের উপক্রম।
মনির সুজ-এর মালিক মো. মনির জানান, সরকারিভাবে কোন আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা হলে তাতে এই ক্ষুদ্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প মালিক সমিতির আহ্বায়ক মো কবির জানান, এক বছরের বকেয়া টাকা আমরা কালেকশন করতে পারিনি করোন পরিস্থিতিতে। তার উপর বর্তমানে বিদেশী জুতার সুন্দর সুন্দর ডিজাইন এবং দাম কম হওয়ায় স্থানীয়ভাবে হাতে তৈরি পাদুকার চাহিদা কমে গেছে। আরও জানান, সরকার ঘোষিত প্রণোদনার একটা টাকাও আমরা পাইনি। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সহজ ঋণ দেওয়াসহ সরকারি সুবিধা বাড়ানো দাবি জানান ।
‘আল আরাফ সুজে’র মালিক মো. আনোয়ার জানান, বিদেশি জুতায় বাজার ভরে গেছে। এ কারণে আমাদের জুতার চাহিদা কমে গেছে। করোনার কারণে গত বছর তেমন কোনো কাজ পাইনি। আগে কারখানায় ৫০ জন কাজ করলেও বর্তমানে কাজ করছেন ১৫ জন শ্রমিক।
চট্টগ্রাম সু-মেটেরিয়াল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির আহবায়ক জানান, আমাদের এখানে একশত মতো দোকান আছে। প্রত্যেক দোকানে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকার মালামাল ছিলো। বিক্রিও ভালো হতো।এখন দোকান গুলোতে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মালামালও নেই।