বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
কয়েক মাস আগে চিনের সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন আলিবাবা ও অ্যান্ট সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। তারপরে তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তিনি কোথায় থাকতে পারেন, তা নিয়ে চলছিল জল্পনা। শোনা গিয়েছিল, চিন সরকার তাঁর ইন্টারনেট ব্যবসার ওপরে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। কিন্তু বুধবার ফের দেখা গেল তাঁকে। এতদিন ধনকুবের কোথায় ছিলেন, তা অবশ্য জানা যায়নি। ফলে তাঁকে নিয়ে জল্পনার অবসান হচ্ছে না।
এদিন জ্যাক মা গ্রামের শিক্ষকদের এক অনলাইন কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রতিবছরই তিনি গ্রামের শিক্ষকদের নিয়ে ওই ধরনের সভা করেন। এবছরেও যে তিনি ওই সভায় উপস্থিত হয়েছেন তা প্রথমে একটি স্থানীয় ব্লগে জানানো হয়। পরে জ্যাক মা-র ঘনিষ্ঠরা জানান, এই খবর সঠিক।
নভেম্বরের শুরু থেকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি জ্যাক মা-কে। চিন সরকার তাঁর দু’টি সংস্থা অ্যান্ট গ্রুপ কোম্পানি ও আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেড সম্পর্কে তদন্ত করছিল। চিন সরকারের ধারণা, দেশের বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থাগুলি বড় বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তারা বিশ্বে দু’নম্বরে থাকা অর্থনীতিকে বড় বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে।
গত অক্টোবর মাসে জ্যাক মা চিন সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেছিলেন, সরকারের কর্তারা সুদখোরের মতো আলোচনা করছেন। চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির নানা নীতিরও নিন্দা করেন ধনকুবের। তাঁর মতে, চিনা ব্যাঙ্কগুলি যেভাবে চলছে, তাতে সময়ের সঙ্গে তাল মেলানো যায় না। ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার দাবি করেন জ্যাক মা।
ধনকুবের ওই ভাষণ দেওয়ায় অসন্তুষ্ট হয় জিনপিং সরকার। তাদের মতে, জ্যাক মা কমিউনিস্ট পার্টির কর্তৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। গত নভেম্বরে ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এ প্রকাশিত হয়, জ্যাক মা-কে বিদেশে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ক্রিসমাসের ঠিক আগে তাঁর আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং নিয়ে তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়। জ্যাক মা-র অপর কোম্পানি অ্যান্ট গ্রুপের ব্যবসাও গুটিয়ে আনতে বলা হয়।
১৯৬৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জ্যাক মা পূর্ব চিনের হাংঝৌ শহরে দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। হাইস্কুল শেষ করে কলেজে ভর্তির জন্য তিনি পর পর দু’বার পরীক্ষা দিলেও পাশ করতে পারেননি। শেষপর্যন্ত তিনি হাংঝৌ টিচার্স ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে স্নাতক হওয়ার পরে চাকরির চেষ্টা করেছিলেন জ্যাক মা। শোনা যায়, ৩০টি প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করে তিনি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। যে সব প্রতিষ্ঠান তাঁকে চাকরি দেয়নি, তার মধ্যে কেএফসিও রয়েছে। তাঁর আসল নাম মা ইউয়ান। কিন্তু তিনি বিখ্যাত হয়েছেন জ্যাক মা নামে।