জয়পুরহাট থেকে খোকন হোসেন জাকির: স্ট্রবেরি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন জয়পুরহাটের যুবক ও কৃষকরা। এখানকার স্ট্রবেরি অত্যান্ত স্বুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
তবে, কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শ পায়না বলে অভিযোগ রয়েছে কৃষকদের। অবশ্য, জেলা কৃষি বিভাগ বলেছে যে ফসলটি সম্ভাবনাময় , কৃষকদের অবশ্যই সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
জানাগেছে, ২০০৯ সালের জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ এলাকার ( ঢাকাতে অবস্থানরত ) রুহুল ইসলাম রেজা ক্যালিফোনিয়া, ইউএসএ থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজ গ্রামে ৬ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। গ্রামে তার ভাই জিল্লুর রহমান পরিচর্যা করতেন। নতুন এ ফলে চাষের জন্য কৃষক ও যুবকদের উদ্বুদ্ধ করেন তারা এবং গ্রামের কৃষকদের চারা সরবরাহ করে দেন।
অন্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভ হওয়ায় আশপাশের গ্রামের লোকজন ধীরে ধীরে ঝুকে পড়েছে স্ট্রবেরি চাষে। এখানে ফেস্টিভেল,কামারোসা জাতের মধ্যে ফেস্টিভেল জাতের স্ট্রবেরি চাষ বেশি হয়। চারা লাগানোর ৩ মাস পর থেকে ৬ মাস পর্যন্ত স্ট্রবেরি ফলন দেয়। ফেস্টিভেল জাতটি ১ বিঘা জমিতে প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ করে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কেজি স্ট্রবেরী ফল হয়। সিজন শুরুর সময় প্রতি কেজি ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। ধীরে ধীরে আমদানি বেশি হলে প্রকারভেদে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা পযর্ন্ত এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে । এতে গড়ে এক সিজনে প্রতি বিঘাতে ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। এ ফল অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু হওয়ায় জেলা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর চাহিদা বেশি। এবার এ জেলায় ১০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার জামালপুর, খেজুরতলী, চান্দা, শুকতাহারের চাষিরা জানান, অন্য বছরের চেয়ে এবার আবহাওয়া ভালো হওয়ার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। এবার দাম ও ভালো। কিন্তু কৃষি বিভাগের সহযোগীতা, পরামর্শ কোনো কিছুই পাইনা। যা করি আমরা নিজ উদ্যোগে করি। আমাদের পরিবারের সদস্যরা বিক্রির জন্য বাড়িতে প্রসেসিং করে সারাদেশে পাঠায়। সরকারি ভাবে প্রসেসিং প্ল্যান্ট করলে ও বেচাকেনার জন্য এই এলাকায় নির্ধারিত হাট হলে আমরা আরো লাভবান হবো।
এ অঞ্চলের প্রথম চাষি রুহুল ইসলাম রেজা বলেন, আমি ইউএসএ থেকে চারা সংগ্রহ করে আমার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ এলাকায় ৬ বিঘা জমিতে চাষ করি। এবং আশপাশের গ্রামের কৃষক ও বেকার যুবকদের নিকট চারা সরবরাহ করি। এখন জয়পুরহাট সহ সারা দেশে চাষ হচ্ছে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক, কৃষিবিদ মোঃ শফিকুর ইসলাম বলেন,অন্যবারের চেয়ে এবার স্ট্রবেরি চাষ অধিক হয়েছে। এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল। খরচের তুলনায় লাভ বেশি। কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হয় বলে দাবি করেন তিনি।