বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: এখন থেকে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। সঞ্চয়পত্র বিক্রির আগে গ্রাহকের টিআইএন সঠিক কি না, তা যাচাই করবে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। এ জন্য সম্প্রতি সঞ্চয় অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) টিআইএন সার্ভারে ঢুকে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকের তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে দুই লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু সঞ্চয়পত্র বিক্রির সময় গ্রাহক যে টিআইএন নম্বর দেন, তা সঠিক কি না, এতদিন সঞ্চয় অধিদপ্তর তা যাচাই করতে পারেনি। কিন্তু এনবিআর এবং সঞ্চয় অধিদপ্তরের সমন্বয়ের কারণে এখন থেকে সঞ্চয় অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এনবিআরের টিআইএন সার্ভারে ঢুকে দেখতে পারবেন গ্রাহকের দেয়া টিআইএন সঠিক কি না। সঠিক হলেই শুধু সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ পাবেন গ্রাহক। অন্যদিকে এ প্রক্রিয়ায় এনবিআরও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের তথ্য জানতে পারবে। কোন কোন টিআইএনধারী সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, বছর শেষে তারা রিটার্নে কত টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন, তার সবই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়া যায়।
অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেসের (এপিআই) মাধ্যমে এনবিআর ও জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান হবে। কিছুদিন আগে এ উপায়ে পাঁচটি কর অঞ্চলের সঙ্গে পরীক্ষামূলকভাবে সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের ৩১টি কর অঞ্চলের সঙ্গে এ ধরনের এপিআই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
তবে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে যেসব টিআইএন নেয়া হয়েছে, তারাই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। অনেকে পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে টিআইএন নেন। এটি টিআইএন নেয়ার এক ধরনের অ্যাডহক ব্যবস্থা। জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্যভা-ারের সঙ্গে টিআইএন সম্পৃক্ত, তাই পাসপোর্ট দিয়ে করা টিআইএন ব্যবহার করে সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। এতে বহু প্রবাসী বাংলাদেশি নিজেদের নামে সঞ্চয়পত্র কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কারণ, তাদের অনেকের স্মার্ট কার্ড নেই। তারা পাসপোর্ট ব্যবহার করে টিআইএন নিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে পারছেন না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর বিভাগে এমন কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। তবে এ ধরনের সমস্যা নিয়ে কেউ এলে এনবিআরের কর কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে তা সমাধানের চেষ্টা করেন বলে জানান।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছর লাখো টিআইএনধারী সঞ্চয়পত্র কেনেন। সুদের ওপর কর কমাতে অনেকেই সঞ্চয়পত্র কিনতে গিয়ে ভুয়া টিআইএন ব্যবহার করেন। এখন সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
সরকার চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে নিট ৩২ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে নিট আয় হয়েছিল ৪২ হাজার কোটি টাকা।