বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট কার্গোর সাথে জাহাজে রপ্তানি পণ্যও পাঠাতে চায়। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দরের মতামত জানতে চেয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর পুরোদমে প্রস্তুত প্রতিবেশি দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট কার্গো নিয়ে আসা জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের জন্য। জানুয়ারিতে বন্দর চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছিলেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জানুয়ারিতে কলকাতা থেকে দু’টি জাহাজের ট্রায়াল হবে বলে সংবাদ ছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম ও কলকাতা বন্দর প্রশাসনের মধ্যে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত না হওয়ায় এ পর্যন্ত হয়নি। অবশ্য, মাস দু’য়েকের মধ্যে ট্রান্সশিপমন্ট কার্গোর জাহাজ চট্টগ্রাম আসবে বলে উল্লেখ করেছেন কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট চেয়ারম্যান। তিনি এর প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবে ত্রিপুরায় স্থল বন্দরে পণ্য খালাস ও মজুদের সুবিধা সরেজমিনে দেখে গেছেন। কলকাতা থেকে জাহাজে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়কপথে সরাসরি আগরতলা স্থলবন্দর নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। কলকাতা বন্দরে চট্টগ্রামমুখী ট্রান্সশিপমেন্ট কার্গো মজুদ রাখার জন্য বিশেষ সুবিধা প্রস্তুত করা হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ কোস্টাল শিপিং চুক্তির আওতায় পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করে। এসব জাহাজকে অন্য দেশের বন্দর থেকে আসা জাহাজের একই নিয়মে জেটিতে ভিড়তে হয়। তবে, ট্রান্সশিপমেন্ট কার্গোর জাহাজ ভিড়বে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। খালাস করা পণ্য সড়ক পথে চলে যাবে আখাউড়া হয়ে আগরতলা। চট্টগ্রাম-কলকাতা সমুদ্রপথে দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার। আর চট্টগ্রাম থেকে আগরতলা ২০০ কিলোমিটার। আপাতত আখাউড়া দিয়ে নেয়া হলেও পরবর্তীতে রামগড়-সাব্রুমে ফেনি নদীর ওপর নির্মিয়মান মৈত্রী সেতু-১ দিয়ে পারাপার হবে ট্রান্সশিপমন্ট পণ্য।
আন্তর্জাতিক যেসব শিপিং কোম্পানি জাহাজ পরিচালনা করবে তারা কি পরিমান ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য পাবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছে না। সেটা তারা কলকাতা বন্দর সংস্থাকে অবহিত করে জানতে চেয়েছে জাহাজে একই সাথে রপ্তানি পণ্য পাঠানো যাবে কী না সেটা। কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে বিষয়টি খোলাসা করতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর প্রশাসন বিষয়টি আলোচনা করেছে। ট্রান্সশিপমেন্ট কার্গোর জাহাজে রপ্তানি পণ্য থাকলে তখন আর বিশেষ সুবিধা পাওয়ার উপযোগী হবে না এবং সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজের একই নিয়ম সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে অভিমত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক-এর কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে উল্লেখ করেন যে চট্টগ্রাম বন্দর এবং কলকাতা বন্দরের শীর্ষ পর্যায়ে কথাবার্তা চলছে ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের জাহাজ হ্যান্ডলিং কিভাবে করা হবে তা নিয়ে। তা চূড়ান্ত হলে শুরু হবে ট্রায়াল রান।
বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের সরকার প্রধান প্রায় ৯ বছর আগে বহুমাত্রিক ট্রানজিট (নৌ,সড়ক ও রেল) চালুর বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক হয়। ২০১৬ সালের জুনে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে নৌ-ট্রানজিটের আওতায় পণ্য পরিবহন শুরু করে ভারত।