Home First Lead ট্রেনে নাশকতা: শিশুসন্তান ও মা’সহ ৪ জন পুড়ে অঙ্গার

ট্রেনে নাশকতা: শিশুসন্তান ও মা’সহ ৪ জন পুড়ে অঙ্গার

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: রাজধানীর তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় চারজন দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্প ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া।

আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার পর এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন  জানান, ট্রেনটি নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় আসছিল। বিমানবন্দর স্টেশন পার হয়ে ট্রেন খিলক্ষেতে আসলে যাত্রীরা আগুন দেখতে পান। এরপর চালক ট্রেনটি তেজগাঁওয়ে থামান।

নাদিরা আক্তার পপির কোলে শিশু সন্তান ইয়াছিন। ট্রেনে নাশকতার আগুনে দুজনে প্রাণ হারিয়েছে। ছবি সংগৃহীত

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘হরতাল সমর্থকরা তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সেপ্রেসের বগিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভোর ৫টা ৪ মিনিটে আমাদের কাছে এ সংবাদ আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ৩টি ইউনিট পাঠানো হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টার পর পৌনে ৭টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে একটি বগি থেকেই চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে নাদিরা আক্তার পপি ও তার তিন বছরের ছেলে ইয়াছিনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে । বাকি দুজন পুরুষ। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। চারজনের লাশ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

 

পুলিশ বলেছে, আগুন নেভানো ও লাশগুলো উদ্ধারের পর ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নিহত ইয়াসিনের মামা হাবিবুর রহমান হাবিব সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তাদের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। ৩ ডিসেম্বর তারা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। ঢাকায় ফিরতে রাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে রওনা দিয়েছিলেন। ভোরে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। সাথে ছিলেন ইয়াসিনের বড় ভাই ফাহিম (৮) ও তাদের মা নাদিরা।

তিনি বলেছেন, বিমানবন্দর স্টেশনে এসে ট্রেনটি থামলে তখন কিছু যাত্রী সেখান থেকে নেমে যায়। এ সময় তাদের পেছনের সিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যায়। এরপর ট্রেনটা চলতে শুরু করা মাত্রই পেছনের সিট থেকে আগুন জ্বলে ওঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন দেখতে পেয়ে ভেতরে থাকা যাত্রীরা চিৎকার শুরু করেন। পরে  ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশনে থামানো হয়। দৌড়ে হাবিবুর ও ফাহিমসহ অন্য যাত্রীরা নামতে পারলেও ভেতরে আটকা পড়েন ছোট ইয়াসিন ও তার মা নাদিরা। তাদেরকে আর কোনোভাবেই বের করতে পারেননি। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস তাদের মরদেহ বের করে।

গত ১৩ ডিসেম্বর বিএনপির অবরোধের মধ্যে গাজীপুরের ভাওয়ালে রেল লাইন কেটে ফেলায় এই মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের সাতটি বগিসহ উল্টে পড়েছিল। সেই ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয় এবং একদিন ধরে ওই লাইনে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়েছিল।