Home স্বাস্থ্য গরমে ফিট থাকতে পানি খাওয়ার পরিমাণ কি বাড়াতে হবে?

গরমে ফিট থাকতে পানি খাওয়ার পরিমাণ কি বাড়াতে হবে?

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: বাইরে বেরোলেই বোঝা যাচ্ছে সূর্যের তাপে পুড়ছে শরীর। বসন্তের মৃদু বাতাসের বদলে গরম হাওয়ার আঁচ এসে লাগছে চোখেমুখে। সেই সঙ্গে গরমে অস্বস্তি তো আছেই। দরদর করে ঘাম ঝরছে কপাল বেয়ে। শহর থেকে শহরতলির বর্তমান চিত্রটি এমনই। এ বছর গরম বাড়বে। আবহাওয়া দপ্তর আগাম সতর্কতা দিয়েই রেখেছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে চাইলে বেশি করে পানি খাওয়া ছাড়া উপায় নেই। শরীর ডি-হাইড্রেটেড হয়ে গেলেই বিপদ।

তেষ্টা না পেলেও কিছুক্ষণ অন্তর পানি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কাজের চাপে, ব্যস্ততায় পানি খাওয়ার কথা মনে থাকে না অনেকেরই। কিন্তু গরমে ফিট থাকতে হলে, ঘন ঘন পানি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। শুধু গরমকাল বলে নয়, রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে হলে পানি খাওয়ার কোনও বিকল্প নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে অন্য কোনও রোগের ঝুঁকি, জলেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্থ থাকার রসদ। তবে  প্রাপ্তবয়স্কদের তিন-সাড়ে তিন লিটার  খাওয়ার কথা বলা হয়।

তবে গরমে কি পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে? চিকিৎসক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ যে হারে গরম বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে, তাতে  বেশি করে খেতেই হবে। শরীরে পানির পরিমাণ যদি কমে যায়, তা হলে নানা রোগবালাই এই সময় জাঁকিয়ে বসবে। সেটা ডায়রিয়া থেকে সংক্রমণ, যেকোনও কিছুই। তা ছাড়া ডি-হাইড্রেশনের ভয় তো আছেই। তাই কিছুতেই শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হতে দেওয়া যাবে না। তবে ৩-৩.৩০ লিটারের বেশি খাওয়ার দরকার পড়বে না। এই পরিমাণ খেলেই হবে। তবে ডায়াবিটিস, হার্টের রোগের ক্ষেত্রে  খাওয়ার নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। সেই পরিমাণটা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।’

অনেকেরই পানি খাওয়ার কথা মনে থাকে না। তাই জলের বিকল্প খোঁজেন। পুষ্টিবিদ অর্পিতা দেব বলছেন, ‘পানির বিকল্প পানিই। পানি খেলে যে উপকার পাওয়া যাবে, তা আর অন্য কোনও কিছুতেই মিলবে না। তবে কে, কতটা জল খাবেন সেটা ধার্য হয় ব্যক্তির বয়স, উচ্চতা, ওজনের উপর নির্ভর করে। আবার কে, কোন পরিবেশে থাকছেন, তার উপরেও  খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে। যিনি বাইরের রোদে ঘুরে কাজ করেন, স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর শরীর থেকে বেশি পানি বেরিয়ে যায়। ফলে তাঁকে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতেই হবে। অন্য দিকে দিনভর এসিতে থাকলেও যে পানি খাওয়ার প্রয়োজন নেই, তা একেবারেই নয়।’

গরমে সাময়িক স্বস্তি পেতে অনেকেই আখের রস, কোল্ড ড্রিংকসে গলা ভেজাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক তৃপ্তি দিলেও এই ধরনের পানীয় শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয় বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ। অর্পিতার কথায়, ‘কোল্ড ড্রিংক উল্টে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি করে। রাস্তায় ঠেলাগাড়ির আখের রসে যে পানি ব্যবহার করা হয়, তা আদৌ কতটা পরিষ্কার, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে আখ কিনে এনে চিবিয়ে খেতে পারলে ভালো।’

দিনে কতটা জলপান করা উচিত?​

এই প্রশ্নের উত্তরে পুষ্টিবিদ শ্রাবণী মুখোপাধ্যায় জানালেন, যে কোনও সুস্থ মানুষকে গোটা বছর ধরে প্রতিদিন অন্তত ৩ লিটার পানি খেতেই হবে। তাতেই শরীর থাকবে সুস্থ সবল। তবে গরমের সময় শুধু ৩ লিটার  খেলে চলবে না, বরং তার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। তাই এই সময় দিনে অন্ততপক্ষে ৪ লিটার খাওয়ার চেষ্টা করুন। আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চললেই আপনাদের ডিহাইড্রেশনের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা কমবে।