বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
অবশেষে সন্ধান মিলল পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু গাছের। তিন বছরের পরিকল্পনা, পাঁচটি অভিযান এবং ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে টানা দুই সপ্তাহ ট্রেক করার পর অবশেষে দেখা মেলে দৈত্যাকার এই গাছটির। অ্যাঞ্জেলিম ভারমেলো প্রজাতির এই গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ডিনিজিয়া এক্সেলসা। ২৯০ ফুট উচ্চতার এই গাছটির বয়স নেহাত কম নয়। প্রায় ৬০০ বছরের পুরোনো রাক্ষুসে চেহারার এই গাছ দৈর্ঘ্যে একটা ২৫ তলা বাড়ির সমান। গবেষকদের মতে, এখনো পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া আমাজন জঙ্গলের সর্ববৃহৎ গাছ এই অ্যাঞ্জেলিম ভারমেলো (Giant Tree)। উত্তর ব্রাজিলের ইরাতাপুরু রিভার নেচার রিজার্ভের ছাউনির কাছে অবস্থিত দৈত্যাকার এই গাছটির কাণ্ডের পরিধি ৯.৯ মিটার।
২০১৯ সাল নাগাদ একটা থ্রিডি ম্যাপিং প্রকল্পের অংশ হিসাবে বেশ কিছু স্যাটেলাইট ছবি তোলা হয়। সেই ছবিতেই প্রথমবার এই বিশাল গাছটিকে শনাক্ত করেন একদল গবেষক। কিন্তু আমাজনের বিপদসংকুল গভীর অরণ্য ভেদ করে এই দৈত্যাকার গাছের পৌঁছতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে যায় বিজ্ঞানীদের। আমাজনের ঘন জঙ্গলে বিষাক্ত পোকা, সাপ, জন্তুর আতঙ্ক আর তার সঙ্গে হয়ে চলা অবিরাম বৃষ্টির বাধা পার করে এগোতে হচ্ছিল তাঁদের। একবার, দুবার নয়, ব্যর্থ হয় পরপর চারটে অভিযান। বিষাক্ত পোকামাকড় এবং মাকড়সার আক্রমণে অসুস্থও হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী। কিন্তু হাল ছাড়েননি তাঁরা। টানা তিন বছরের চেষ্টা আর ব্যর্থতার শেষে সাফল্য আসে পঞ্চম অভিযানে। ঘনজঙ্গল ঘেরা নদীপথে নৌকায় ২৫০ কিলোমিটার, তার পরে আরও ২০ কিলোমিটার হেঁটে অবশেষে পৃথিবীর দীর্ঘতম গাছটির কাছে পৌঁছন গবেষকেরা (Giant Tree)।
অভিযানের এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই খুশি উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা। টিমের অন্যতম সদস্য আমাপা ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট ইঞ্জিনিয়ার দিয়েগো আর্মান্দো সিলভা বলেন, এই গাছকে ছুঁতে পারাটাই আমার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। দেখে মনে হচ্ছে, গাছটি অন্তত ৪০০-৬০০ বছরের প্রাচীন। সেখানকার মাটি, গাছের পাতা ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাচীন পৃথিবীর অনেক অজানা কাহিনি হয়তো ডালপালা মেলে আছে সুপ্রাচীন এই গাছের শরীরে। তার খোঁজেই শুরু হবে নতুন গবেষণা।