বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
নারায়নগঞ্জ: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশে প্রতিবছর বাড়ছে ভোজ্যতেলের চাহিদা। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য গম থেকে তৈরি আটা-ময়দার চাহিদাও। বৃদ্ধি পাচ্ছে মাছ ও মুরগির খাবারের চাহিদা। এসব চাহিদাকে লক্ষ্য করে চর সৈয়দপুরে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি সমন্বিত কারখানা- ডেল্টা অ্যাগ্রোফুড ইন্ডাস্ট্রিজ।
প্রায় ৩৫ একর জুড়ে তৈরি হচ্ছে কারখানাটি। নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। যন্ত্রপাতি সরবরাহকারি চিনা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা এসে এটা চালু করে দিয়ে যাবেন বলে জানালেন ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্টরা।
সীকম গ্রুপ এবং সমুদার যৌথ বিনিয়োগে স্থাপন করা হচ্ছে ডেল্টা অ্যাগ্রোফুড ইন্ডাস্ট্রিজ। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। এর ৪০ শতাংশ জোগান দিচ্ছে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড।
কারখানাটির সয়াবিন বীজ মাড়াইয়ের সক্ষমতা বছরে প্রায় ৮ লাখ টন। প্রতি একশ’ কেজি মাড়াই করে ক্রুড তেল পাওয়া যায় ১৮ কেজির মত। এই প্রক্রিয়াতে তৈরি হয় সয়াকেক। তা মাছ এবং মুরগির খাবার। ১০০ কেজি সয়াবিন বীজ মাড়াইয়ে অশোধিত তেল ছাড়া পাওয়া যায় প্রায় ৭৮ কেজি সয়াকেক। দেশে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে মাছ চাষ এবং মুরগি খামার। তাতে বেড়ে চলেছে সয়াকেক-এর চাহিদা। উদ্ভিদ প্রোটিন সয়াকেক আমদানি করতে হয়। পরিমাণ বছরে প্রায় ৪ লাখ মেট্রিক টন। প্রতিবেশি দেশসমূহেও রপ্তানির সুযোগ রয়েছে বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য হলেও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে প্রতিবছর গমের চাহিদা বাড়ছে। ৬ বছরে তা দ্বিগুণের বেশি । পরিসংখ্যানে জানা যায়, ৬ বছর আগে মাথাপিছু গমের দৈনিক চাহিদা ছিল ৪২ গ্রাম। বর্তমানে ১২৫ গ্রাম। তাছাড়া, বেকারিজাত পণ্যও রপ্তানি হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে ডেল্টা অ্যাগ্রোফুড ইন্ডাস্ট্রিজ গম থেকে আটা ও ময়দা উৎপাদন করবে।
২০০৭ সালে সিটি গ্রুপ দেশে প্রথম সয়াবিন মাড়াই কারখানা স্থাপন করে। সিটি সিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সেটা নারায়নগঞ্জে। এরপর ২০১১ সালে এগিয়ে আসে মেঘনা গ্রুপ। উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখে সিটি ও মেঘনা গ্রুপ এখাতে তাদের বিনিয়োগ পরবর্তীতে আরও বৃদ্ধি করেছে। গ্লোবও বিনিয়োগ করেছে। দেশের বিভিন্নস্থানে বিনিয়োগ করেছে আরও অনেকে। এরপর যৌথভাবে এগিয়ে এল সীকম গ্রুপ ও সমুদা।
সীকম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক জানান, ডেল্টা অ্যাগ্রোফুড ইন্ডাস্ট্রিজ পূর্ণ ক্ষমতায় চালু হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ১২০০ লোকের কর্মসংস্থান হবে। তাছাড়া, গম এবং সয়াবিন আবাদও বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। অপরদিকে, অশোধিত ভোজ্যতেল এবং সয়াকেক আমদানি কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন।