Home Third Lead ধ্বংসস্তূপে অলৌকিক জন্ম শিশুকন্যার, তুরস্কে মৃত্যু ২১ হাজার ছাড়িয়েছে

ধ্বংসস্তূপে অলৌকিক জন্ম শিশুকন্যার, তুরস্কে মৃত্যু ২১ হাজার ছাড়িয়েছে

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

একের পর এক লাশ জমে পাহাড় তৈরি হচ্ছে ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় (Turkey Earthquake)। তারই মধ্যে প্রাণের স্পন্দনে চমকে উঠছেন উদ্ধারকারীরা। এভাবেই ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে জীবিত উদ্ধার হয়েছে এক ছোট্ট ভাইবোন, মিলেছে ৬ বছরের এক শিশুর কান্নার শব্দ।

কিন্তু সবচেয়ে মিরাকেল ঘটিয়ে প্রাণে বেঁচেছে, এক সদ্যোজাত। তাকে যখন উদ্ধার করা হয়েছিল মৃত্যুপুরী থেকে, তখনও তার মায়ের শরীরের সঙ্গে জুড়ে ছিল নাড়ি। যদিও প্রাণ ছিল না মায়ের। তিনি মারা গিয়েছিলেন আগেই, হয়তো সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখানোর সঙ্গে সঙ্গেই। কেবল মা নয়, ওই একরত্তির বাবা ও অন্য চার ভাই-বোনও ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছে।

Miracle amid devastation': Baby born under rubble; rescued after Syria, Turkey  earthquake. Watch! - World News

এই অবস্থায় শিশুকন্যাটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে রেখেছেন উদ্ধারকারীরা। তার নাম রাখা হয়েছে, আয়া। আরবিতে এই আয়া শব্দের অর্থ, অলৌকিক। উদ্ধার করার সময়ে শরীরে অনেক চোট ছিল তার। ছিল শ্বাসকষ্টও। এখন ভাল আছে সে।

Miracle Baby' Born During Turkish-Syrian Earthquake Survives | YourTango

আয়াকে উদ্ধার করার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল দিন কয়েক আগেই। এবার তাকে দত্তক নিতে হাজার হাজার লোক আবেদন করছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। হাসপাতালের তরফেও জানানো হয়েছে, সারা দুনিয়া থেকে আবেদন আসছে শিশুটিকে দত্তক নিতে চেয়ে। তবে এখনই তাকে দত্তক দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপেক্ষা করছে, তার কোনও আত্মীয় যদি আসে খবর পেয়ে।

হাসপাতালের ম্যানেজার খালিদ আত্তিয়া জানিয়েছেন, তাঁরও চার মাসের একটি মেয়ে রয়েছে। নিজের সন্তানের মতো করেই আয়ার যত্ন করছেন তিনি। তাঁর স্ত্রীই নিজের মেয়ের পাশাপাশি বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এই অলৌকিক সদ্যোজাতকেও।

Turkey-Syria earthquake: Baby pulled from rubble after mum gives birth  under flattened building | ITV News

অন্যদিকে, শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই পেরিয়েছে ২১ হাজার (Death Toll Crossed 21000)! ধ্বংসস্তূপ থেকে একের পর এক বেরিয়ে আসছে দেহ। ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের পরে পেরিয়ে গেছে চার দিন। ধ্বংসস্তূপের আনাচকানাচে প্রাণের সম্ভাবনা কোথাও থাকলেও, খাবার ও জলের অভাবে প্রাণ যেতে পারে বলে আশঙ্কা। সেই সঙ্গে রয়েছে বৃষ্টি, প্রবল শীতের কামড়। এই পরিস্থিতিতে যদি কোথাও কোনও প্রাণ এখনও থেকেও থাকে, সেই খোঁজেই ২৪ ঘণ্টা নাওয়াখাওয়া ভুলে চলছে উদ্ধারকাজ।

ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে উদ্ধারকারী দল এবং ত্রাণ। তবে তীব্র ঠান্ডায় বাধা পড়ছে উদ্ধারকাজেও। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফেও উদ্ধারকারী দল নামানো হয়েছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে নয়। এসবের মধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলার নীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচনার মুখে পড়েছে তুরস্ক সরকার। উদ্ধার নিয়ে কথা স্বীকার করেছেন সে দেশের প্রেসিডেন্টও।

Hopes Fade For Survivors 72 Hours After Turkey Earthquake, Over 20,000 Dead

এসবের মধ্যেই তুরস্ক এবং সিরিয়া, দু’দেশেই ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। উদ্ধারকাজ এবং ত্রাণ বণ্টন নিয়ে অসন্তুষ্ট তাঁরা। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, বহু এলাকায় রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে যাওয়ায় বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে পৌঁছতেই পারছেন না তাঁরা। সেই কারণেই পৌঁছচ্ছে না ত্রাণও। ফলে এলাকায় এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভূমিকম্প থেকে প্রাণে বেঁচেও, তীব্র ঠান্ডায় খালি পেটে খোলা আকাশের নীচে থাকতে হচ্ছে তাঁদের।