Home বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ তৈরি পোশাকে আয় কমলেও সার্বিক রপ্তানি কমেনি

তৈরি পোশাকে আয় কমলেও সার্বিক রপ্তানি কমেনি

ঢাকা: চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৯২৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে দশমিক ৩৬ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথমার্ধে রপ্তানির প্রধান খাত তৈরি পোশাকের আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। তবে সরকারি পাটকল বন্ধ হলেও পাট খাতে আকর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

অর্থবছরের প্রথমার্ধে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৩০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যদিও করোনার প্রভাবে তৈরি পোশাক ছাড়াও চামড়া ও হিমায়িত খাদ্যের মতো রপ্তানি আয়ের অন্যতম খাতগুলো তলানিতে নামছে। অবশ্য করোনার আগেও এসব খাতের অধিকাংশের রপ্তানি আয় কমতে দেখা গেছে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিভিন্ন দেশের লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রায় সব দেশের রপ্তানি আয় নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পপণ্যের রপ্তানিও পড়েছে চ্যালেঞ্জের মধ্যে। তবে এই বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে তৈরি পোশাকের আয় কমলেও সার্বিকভাবে রপ্তানি খুব বেশি কমেনি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯৬৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। আর এ সময়ে আয় হয়েছে ১ হাজার ৯২৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।

দেশের সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮০ শতাংশের বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কম। যদিও এ সময়টাতে নিট পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থবছরের প্রথমার্ধে নিট পোশাকের রপ্তানি ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ পেয়েছে। তবে ওভেনে কমেছে ১০ দশমিক ২২ শতাংশ।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ইউরোপ-আমেরিকায় ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হওয়ায় পোশাক রপ্তানি কমতে থাকে। মাঝে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ডিসেম্বরে আবার কমে যায়।

বর্তমানে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ক্রয়াদেশ আসার গতি শ্লথ বলে দাবি করেছেন পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরেই চামড়া খাতের রপ্তানি আয় ধারাবাহিকভাবে কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ৪৪ কোটি ৬১ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৫ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের চামড়া, ১১ কোটি ২৭ লাখ ডলারের চামড়াজাতপণ্য ও ২৭ কোটি ডলারের চামড়ার জুতা রপ্তানি হয়েছে। জুতা রপ্তানি ২ শতাংশ কমলেও চামড়া ও চামড়াজাতপণ্যে কমেছে যথাক্রমে ১৭ ও সাড়ে ১০ শতাংশ।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, অর্থবছরের প্রথমার্ধে ২৮ কোটি ডলারের হিমায়িত খাদ্য, ৫২ কোটি ডলারের কৃষিজাত পণ্য, ৫৪ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল, ২৬ কোটি ডলারের প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৫৭ শতাংশ।

অপরদিকে অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৬৬ কোটি ৮১ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তার মধ্যে ৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের কাঁচা পাট, ৪৪ কোটি ৯২ লাখ ডলারের পাটের সুতা, ৯ কোটি ১৮ লাখ ডলারের চট ও বস্তা রয়েছে। পাটের সুতায় ৪২ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং চট ও বস্তা রপ্তানিতে ৫৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর কাঁচা পাটের রপ্তানি কমেছে ৪ শতাংশ। তবে পাটে রপ্তানি আয় বাড়লেও আগামী মৌসুমে কাঁচা পাটের ঘাটতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে করে আগামী পাট রপ্তানি কমে যেতে পারে।

-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক