Home বিনোদন দর্শনার্থীতে মুখরিত রাঙামাটি

দর্শনার্থীতে মুখরিত রাঙামাটি

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

রাঙামাটিঃ তিন দিনের টানা সরকারি ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ছুটির শেষ দিনেও প্রচুর দর্শনার্থীতে মুখরিত পর্যটক নগরী রাঙামাটি।

মৌসুমের শুরু থেকেই পর্যটকের আগমন ঘটছে উল্লেখযোগ্য হারে। তাই প্রাণ ফিরছে রাঙামাটির পর্যটনে। পর্যটকদের আগমনকে ঘিরে নিরাপদ ভ্রমণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

শীতের শেষে আগমন ঘটেছে বসন্ত মিষ্টিমাখা আমেজ। উঁকি দিচ্ছে গরমও। ধীরে ধীরে কমছে শীতের তেজ। কখনো কখনো দোলা দিয়ে যাচ্ছে উত্তরের মৃদু হিমেল হাওয়া। অরণ্য, পাহাড়, ঝর্ণা আর হ্রদের শহর রাঙামাটি এখন পুরোদমে পর্যটকদের বরণ করে নিচ্ছে।

এলোমেলো সারিতে সাজানো উঁচু-নিচু আর ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ের সমাবেশ। যে দিকে চোখ যায় স্বচ্ছ জলরাশি আর বিস্তীর্ণ সবুজের হাতছানি। সবুজ পাহাড়ের পরতে পরতে রয়েছে অসংখ্য উচ্ছল ঝর্ণাধারা। নৈসর্গিক লীলাভূমি পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটি যেন শিল্পীর হাতে আঁকা নিখাদ জীবন্ত ছবি! প্রকৃতিপ্রেমিরা এর সান্নিধ্য পেতে ছুটেন পাহাড়ে।

মার্চ থেকে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত গত নয় মাসে পর্যটক শূন্য থাকায় মারাত্মক মন্দা দেখা দেয় পর্যটন ব্যবসায়।

রাঙামাটি চেম্বারের মতে, জেলায় পর্যটনের পাঁচটি খাতে দিনে গড়ে অন্তত সোয়া দুই কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে এসময়। খরচ কমাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো কঠিন সিদ্ধান্তও নিতে হয়েছে। কিন্তু সেই ক্ষত এখন শুকোতে শুরু করেছে। চাঙ্গা হতে শুরু করেছে পর্যটন ব্যবসা।

রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। তাই পর্যটকেরা প্রথমেই ছুটে যান পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায়। বছরে প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ দেশি ও বিদেশি পর্যটক সেতুতে ভ্রমণ করতে আসেন।

এছাড়া শহরের রাজবন বিহার, পুলিশের ‘পলওয়েল পার্ক’, ডিসির ‘রাঙামাটি পার্ক’, সেনাবাহিনীর ‘আরণ্যক’, সুভলং ঝর্ণা ও সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় প্রতিনিয়ত ভিড় জমান বেড়াতে আসা পর্যটকরা। এছাড়া হালের আকর্ষণ ‘সাজেক ভ্যালি’ পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি কাছে টানছে।

হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, টেক্সটাইল (পাহাড়িদের তৈরি কাপড়), নৌযান এবং বিনোদন কেন্দ্রকে ঘিরেই মূলত রাঙামাটির পর্যটন খাত। রাঙামাটি শহরে বেসরকারি ৭০-৮০টি হোটেল-মোটেল রয়েছে। প্রতিদিন চার হাজার অতিথি থাকতে পারে। পর্যটকদের সেবা দিতে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারি রয়েছে পাঁচ শতাধিক। এছাড়া রাঙামাটির সাজেকে ১০৬টি কটেজ-রিসোর্ট রয়েছে। সেখানে ১২ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারিও আছে।

জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রতিদিনই জেলা প্রশাসন কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

রাঙামাটি আবাসিক হোটেল-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকদের আগমন ঘটছে চোখে পড়ার মতো। আশা করছি ২-১ মাসের মধ্যে লোকসান কমিয়ে আনতে পারবো।

পুলিশ সুপার মীর মোদদাছেছর হোসেন বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, বর্তমানে পর্যটন মোটেলের কক্ষগুলো প্রায় শতভাগ বুকিং আছে। এতে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে রাঙ্গামাটি।