গত ১৫ দিন ধরে দক্ষিণ দিল্লির শাহিন বাগে পথে বসে আছেন কয়েকশ মানুষ। তাঁদের বেশিরভাগ মহিলা। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য তাঁদের বিক্ষোভ চলছে। ৩১ ডিসেম্বরের রাতে জাতীয় সংগীত গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিলেন তাঁরা।
শাহিন বাগে কয়েকটি তাঁবু খাটিয়েছেন প্রতিবাদীরা। সঙ্গে আছে কয়েকটি কম্বল। এবার দিল্লিতে ১১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়েছে। তারই মধ্যে অনেকে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে এসেছেন। সাইমা নামে ৩৩ বছরের এক মহিলা বলেন, “আমি দেখছি, আমার সন্তানদের সামনে কোনও ভবিষ্যৎ নেই। মা হিসাবে আমি চাই, তারা আগামী দিনে সুখী হোক। আমরা যে অধিকার পেয়েছি, তা যেন কেড়ে না নেওয়া হয়। এটা আমার একার লড়াই নয়। এ হল সংবিধানকে বাঁচানোর লড়াই।” সাইমা সন্তানদের বাড়িতে রেখে শাহিনবাগে বিক্ষোভ দেখাতে এসেছেন। কিন্তু সাজিদা খান নামে এক ২৪ বছরের তরুণী এসেছেন কন্যসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। তার বয়স এক বছর। তিনি বলেন, “আমি ২০১৪ সালে জামিয়া থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছি। আমার বিষয় ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান। জামিয়াতে কখনও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করা হয়নি। এই প্রথমবার জামিয়ায় অশান্তি হল। আমি তার প্রতিবাদ করছি।”
স্থানীয়রা অবস্থানকারীদের জন্য খাবার আনছেন। টুইটারে অনেকে আবেদন জানিয়েছেন, প্রতিবাদীদের জন্য কম্বল দান করুন। ৯০ বছরের আসমা খাতুন জানিয়েছেন, তিনি প্রতিদিন দুপুর তিনটে থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত শাহিন বাগে থাকেন। তাঁর কথায়, “আমরা সংবিধানের জন্য লড়াই করছি। যারা আমাদের কাছে প্রমাণ চাইছে, তাদের আমি বলব, তোমরা কি তোমাদের পূর্বপুরুষের নাম জানো? আমি তাদের উর্ধ্বতন সাত পুরুষের নাম জিজ্ঞাসা করব।”
৩১ ডিসেম্বর রাতে অনেকে শাহিনবাগে জাতীয় পতাকা নিয়ে আসেন। অনেকের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান লেখা। রাত ১২ টা বাজতেই সকলে সমবেতভাবে শুরু করেন জাতীয় সংগীত।
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক