বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
হাজার হাজা কৃষক দিল্লির পথে। পায়ে হেঁটে তারা যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটাই। দিল্লি পৌঁছনো। ভারতের রাজধানীতে পৌঁছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আনা তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখানো যাতে সরকার আইন বদলে বাধ্য হয়।
এই যাত্রা শুরু হয়েছে ভারতের ছ’টি রাজ্য থেকে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও কেরলের কৃষকরা পা মিলিয়েছেন এই অভিযানে। আর তাঁদের রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে পুলিশের ব্যারিকেড, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস। সেসব কিছু উপেক্ষা করেই পথ হাঁটছেন তাঁরা।
পাঞ্জাব থেকে দিল্লির দিকে যাচ্ছেন প্রায় ৫০ হাজার কৃষক। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হরিয়ানার সোনিপতে তাঁদের উপর ছাড়া হয়েছে জলকামান। কিন্তু তাতেও তাঁদের থামানো যায়নি। এই মিছিলের নেতৃত্বে থাকা কৃষক সংগঠনগুলির দাবি, আজ সন্ধ্যার মধ্যেই দিল্লি সীমান্তে গিয়ে উপস্থিত হবেন তাঁরা।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ও অল ইন্ডিয়া কিষাণ সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, “আশা করা যাচ্ছে ৫০ হাজারের বেশি কৃষক আজ সন্ধ্যার মধ্যে দিল্লি সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকবেন। রাতে সেই সংখ্যাটা আরও বাড়বে। কারণ পাঞ্জাবের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ট্রাক্টরে করে অনেক শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধরাও আসছেন।”
হরিয়ানার সোনিপতে পাঞ্জাব থেকে আসা এই কৃষকদের মিছিলে জলকামান দাগা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছেন তাঁরা। এই নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং ও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। অমরিন্দরের বিরুদ্ধে ‘নির্লজ্জ রাজনীতি’ করার অভিযোগ এনেছেন খট্টর। অন্যদিকে টুইট করে বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অমরিন্দর।
অমরিন্দর টুইট করে বলেন, “কেন মনোহর লাল খট্টর সরকার কৃষকদের দিল্লি যাওয়া থেকে আটকাচ্ছে? শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিলে অংশ নেওয়া কৃষকদের আটকাতে যে শক্তি হরিয়ানা সরকার প্রয়োগ করেছে তা অগণতান্ত্রিক ও সংবিধান বিরুদ্ধ।”
উত্তরপ্রদেশের রামপুরে আটকে দেওয়া হয়েছে ২ হাজারের বেশি কৃষকদের একটি মিছিলকে। দিল্লির দিকে যাওয়া থেকে তাদের আটকেছে যোগীরাজ্যের পুলিশ। এই মুহূর্তে তাঁরা নৈনিতাল-দিল্লি হাইওয়েতে অপেক্ষা করছেন। অন্যদিকে রাজস্থান থেকে উত্তরপ্রদেশ ঢোকার আগেই আটকে দেওয়া হয়েছে মেধা পাটেকরকে।
গত দু’মাস ধরে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও কেরলের প্রায় ৫০০ কৃষক সংগঠন এই দিল্লি অভিযানের পরিকল্পনা করেছে। গত ৩ ডিসেম্বর তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। কিন্তু সেই আলোচনায় বসতে রাজি নন তাঁরা।
কেন্দ্রের আনা তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকমাস আগে থেকেই আন্দোলন শুরু করছেন কৃষকরা। এই আন্দোলনে তাঁরা পাশে পেয়েছেন বিভিন্ন বিভিন্ন বিরোধী দলগুলোকে। অন্যদিকে বিজেপির বক্তব্য, কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। এই আইনগুলি তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এনেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।