বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি,ঢাকা: ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটি মারা গেছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় সিএমএইচয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। পাশাপাশি এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে । সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এর সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
আরও বলা হয়েছে, ‘শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃদস্পন্দন ফিরে আসেনি। উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ শিশুটিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়।’
‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।’
গত ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশু আছিয়া। ৬ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কিন্তু সেখানে অবস্থা আরও খারাপ হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এরপর গত ৮ মার্চ সিএমএইচে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না।
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস উইং জানায়, শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) বোনের শ্বশুরবাড়ি মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকায় বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৫০)-এর লালসার শিকার হয় শিশুটি। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার (০৭ মার্চ) রাতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তারপর তাকে নেওয়া হয় সিএমএইচে।
ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার শিশুটির দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাসহ চারজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রোববার (০৯ মার্চ) রাত ১২টার দিকে মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিনের আদালতে শুনানি শুরু হয়। পুলিশ আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত এক নম্বর আসামি হিটু শেখকে ৭ দিন এবং সজীব হোসেন, রাতুল শেখ ও জাবেদা বেগমের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।