বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ধুনট ( বগুড়া): স্বামীর লাশ দাফনশেষে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মিম খাতুন (১৬) নামে এক নববধূ। মিম উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের আনারপুর গ্রামের কালাম মন্ডলের মেয়ে।
মঙ্গলবার (২মে) ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মিম বাংলা দ্বিতীয়পত্র বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। মিম খাতুন ধুনট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে মানবিক শাখায় পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে।
পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের চালাপাড়া চৈতারপাড়ার নায়েব আলীর ছেলে নান্নু মিয়া (৩০) ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকুরি করতো। ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরে ২৮ এপ্রিল পারিবারিক ভাবেই নান্নু মিয়ার সাথে মিম খাতুনের বিয়ে হয়। গত ৩০ এপ্রিল মিম খাতুনের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন স্বামীর সাথে কেন্দ্রে পৌঁছে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা দেয় মিম। এরপর স্বামীকে সাথে নিয়ে আনারপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে যায়। ওইদিন রাত ৯টার দিকে নবদম্পতি বাবার বাড়িতে একটি কক্ষে একই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে। রাত দেড়টার দিকে ঘুম থেকে জেগে স্বামীকে বিছানায় খুঁজে পায়নি। এ সময় পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ঘরের পাশে গাছের সাথে গলায় রশি পেচানো অবস্থায় নান্নু মিয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখ পায়।
সংবাদ পেয়ে ১ মে সকালের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নান্নু মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। আইনী প্রক্রিয়া শেষে নান্নু মিয়ার মৃতদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। সোমবার রাতে চালাপাড়া চৈতারপাড়ায় নিজ বাড়িতে নান্নু মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
পরীক্ষা শেষে মিম খাতুন জানায়, ওই রাতে একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম। কিন্ত কি কারণে আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে তা সঠিক বলতে পারছি না। বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা খুব একটা ভালো হয়নি।
এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব তফিজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, স্বামীকে হারানো যে কারও জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও এসএসসি পরীক্ষার্থী মিমি স্বামী হারানোর কষ্ট নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আমরাও তার পরীক্ষার সময় যতটা সম্ভব পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।