মশার উৎপাত বৃদ্ধির জন্য নগরবাসী দায়ী: সিটি প্রশাসক
জুলহাজ ইব্রাহিম
চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রামে শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মশার উপদ্রব অসহনীয় পর্যায়ে বেড়ে যাওয়ায় দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন।
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনার জমিয়ে রাখার কারনে মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে জানান সিটি প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন।
হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া মশার কামড়ে মানুষের ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, গোদসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেযজ্ঞরা।
নগরীর খড়ম পাড়ার বাসিন্দা রোমানা আহমেদ জানান, দিনের বেলা কিছুটা কম হলেও সন্ধ্যার পর থেকে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় মশার মশার উৎপাতে বাচ্চাদের পড়ালেখা করতেও সমস্যা হচ্ছে। মশা নিধনের জন্য অতিদ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে এই পরিস্থিতি হয়তো আরো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে।
শুধু খড়মপাড়া নয়, মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠতার অভিযোগ উঠেছে চকবাজার, বহদ্দারহাট, ২ নম্বর গেইট, রাহাত্তারপুল, কালামিয়া বাজার, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, মুরাদপুর, খুলশী, কাতালগঞ্জ ,নাছিরাবাদ, আগ্রাবাদসহ প্রায় সমগ্র শহরে।
মোগলটুলী এলাকার বাসিন্দা শামিম উল ইসলাম জানান, শীত যতই বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মশার উপদ্রব। একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে আমাকে কাজের প্রয়োজনে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। ঘরে-বাইরে সবখানেই মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। পরিকল্পিতভাবে মশা নিধন প্রক্রিয়ার যথাযথ বাস্তবায়ন হলে হয়তো মশার উপদ্রব এভাবে বাড়তো না।
আরাকান হাউজিং সোসাইটি এলাকার ছাত্রনেতা আদনান আলভি জানান, মশার উপদ্রব দিনের পর দিন বাড়ছে। এদিকে সিটি নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদেরকে জয়ী করতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে রাত অবধি ছুটছি। এসময় সবখানেই যন্ত্রনাকর হয়ে দাঁড়িয়েছে মশার উপদ্রব। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য একজন যোগ্য নগরপিতা দরকার। আশা করছি, নির্বাচিত নতুন মেয়র নগরের এসব সমস্যা নিয়ে নগরবাসীকে দ্রুত সমাধান দিবেন।
এব্যাপারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের(চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বিজনেসটুডে২৪-কে বলেন, আমরা মশা নিধনের জন্য যেসব উদ্যোগ নেওয়া দরকার সবই নিয়েছি, এলাকায় এলাকায় ওষুধ ছিটানো হয়েছে। এছাড়া অনেকগুলো নালা-নর্দমা পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপর পরেও মশার উপদ্রব বাড়ার জন্য মানুষজনই দায়ী। মশা রোধের জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে নালা-নর্দমাসহ ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করে গেলেও এলাকার বাসিন্দারা পুনরায় ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র জমিয়ে রাখছে, ফলে এসব জায়গা থেকে মশার বিস্তার ঘটছে। চসিকের নিয়মিত মশা নিধন ওষুধ ছিটানো কার্যক্রম বাস্ততবায়নের ফলে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর হার কমেছে, এ মৌসুমে নগরে এ পর্যন্ত মাত্র ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। মশার উপদ্রব রোধে মানুষের সচেতনা ও দায়িত্ববোধের প্রয়োজন রয়েছে।