বিজনেসটুডে ২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: ২৭ শে জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এইদিন একজন নতুন মেয়র নির্বাচিত হবেন। সেই নতুন মেয়রের কাছে বিপুল প্রত্যাশা নগরবাসীর।
এই প্রথম দলীয় প্রতীকে সিটি নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের মাঝে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশাও বেড়েছে ভোটারদের।
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম এবং ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের মধ্যে এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া অন্য মেয়র প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর (আম), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি)।
নতুন মেয়রের কাছে কি প্রত্যাশা করেন তা বিজনেসটুডে২৪ এর পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতার কাছে। তাদের অভিমত নিম্নে দেয়া হল।
সকলের সাথে সমনন্বয় করে কাজ করতে হবে: মাহবুব
চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, যিনি নগর পিতার আসনে বসবেন তিনি সকল সমস্যা সমাধানে সকলের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবেন এবং পোর্ট সিটিকে যেনো সম্পূর্ণ ব্যবসায়ী বান্ধব নগরীতে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
গেলবছর করোনায় অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়ীরা। আশা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তাতে ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে। আবারও নতুন রূপে ফিরবে ব্যবসায়ীরা। দেশকে এগিয়ে নিতে নতুন নগর পিতা সকলের সমন্বয়ে কাজ করবেন। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এই দেশের মর্যাদা সমুন্নত রেখে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিবে, নতুন নগর পিতার কাছে এটাই প্রত্যাশা।
উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে: মিন্টু
বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি, এমএন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনউদ্দিন আহমেদ মিন্টু বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, সামনের বছরগুলো চট্টগ্রামের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনন্য মাত্রা দিয়েছেন, নতুন নগর পিতাকে সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকারের অনেক মেগা প্রকল্প প্রায় শেষের পথে, কর্ণফুলী টানেলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সহজ হবে। মেয়র যিনি নির্বাচিত হোক, তিনি সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোকে আরও বেগবান করতে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন বলে আমার দৃঢ় প্রত্যাশা।
পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক নগরীতে পরিণত করতে হবে:ছগীর
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, চিটাগাং চেম্বার পরিচালক ছৈয়দ ছগীর আহমদ বলেন, পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম। এখন নতুন মেয়র হিসেবে যিনি নির্বাচিত হবেন তার কাছে প্রত্যাশা থাকবে যেন পুর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হয় এই অঞ্চলটিকে। নগরের বাণিজ্যিক অঞ্চলগুলোকে যেন গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে উন্নয়নের আওতায় এনে জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য সমস্যা দূরীকরণে কাজ করা হয়।
বাণিজ্যের প্রসারে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে: মান্নান
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, সৎ, যোগ্য, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, অভিজ্ঞ ও জনসম্পৃক্ত ব্যবসা বান্ধব মেয়র দেখতে চাই, যিনি নিষ্ঠার সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটিকে আধুনিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন। যে ব্যক্তি নগর উন্নয়নে ও বাণিজ্যের প্রসারে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারবেন, প্রয়োজনে লড়তেও পারবেন তাকেই সিটি মেয়র হিসেবে দেখতে চাই। এছাড়া গত বছর লকডাউনকালীন ব্যবসায় মন্দার যে প্রভাব পড়েছে তা কাটিয়ে উঠার জন্য কাপড় আমদানিতে সহজ শুল্ক ব্যবস্থা করে দেওয়া জরুরি, ব্যবসায়ীদের এটাই চাওয়া নতুন মেয়রের কাছে। যিনি মেয়র নির্বাচিত হবেন, তাকে দল, মত, নির্বিশেষে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে নগরী উন্নয়নের পাশাপাশি অধিক কর্মসংস্থানের জন্য শিল্পায়নের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।
ভ্যাট সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হবে:মোজাম্মেল
তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক মোজাম্মেল হক জানান, নতুন মেয়রের কাছে আমাদের প্রত্যাশা হলো আমাদের ভ্যাট নিয়ে যে সমস্যাটি রয়েছে তার যেন সুষ্ঠু সমাধান করেন এবং প্যাকেজ ভ্যাট সিস্টেমটা পুনরায় যেন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সমস্যার সমাধানে কাজ করেন।
তিনি বলেন, নগরপিতা হিসেবে একজন মেয়রকে নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। চুরি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, মাদক বন্ধে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। যানজটমুক্ত নগর গড়ে তোলাসহ খাল খনন করে নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার উদ্যোগসহ মডেল নগরীর ব্যাপক উন্নয়ন করতে হবে।