রাকিবুল ইসলাম তনু, পটুয়াখালী থেকে: কমিটি বিহীন পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের আজ ১ বছর পূর্ণ হলো। গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারী মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞিপ্তির মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান সিকদার এবং সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন কমিটি বিপুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
তারপর থেকে কমিটি বিহীন চলে আসছে জেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম। ১ বছর ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় অনেকটাই ঝিমিয়ে নেতা-কর্মীরা। নতুন কর্মি তৈরি হচ্ছে না। কমিটি না থাকায় দলীয় প্রোগ্রাম বা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কোন প্রোগ্রামে ছাত্রলীগের উপস্থিতি থাকলেও একতা নেই নেতা-কর্মীদের মধ্যে। দেখা যায় বিভিন্ন প্রোগ্রামে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা বিচ্ছিন্নভাবে সভা আয়োজন করে থাকে। এতে তৈরি হয়েছে গ্রুপিং, বৃদ্ধি পেয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল।
উল্লেখ্য,২০১৭ সালের জুলাই মাসে সম্মেলনের মাধ্যমে মোঃ হাসান সিকদারকে সভাপতি ও ওমর ফারুক মোঃ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ছাত্রলীগের জেলা শাখার মেয়াদ এক বছর। সে হিসেবে গত ২৪ জুলাই ২০১৮ কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ২৯ জুন ২০১৯ সালে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। এরপরে ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৫ অক্টোবর ২০১৯ সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও তা করা সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারী কমিটি বিপুপ্ত ঘোষণা করা হয়। জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন হতে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহম্মেদ রাসেল এবং সহ সম্পাদক শেখ রিজওয়ান আলীর কাছে জীবন বৃত্তান্ত দেওয়ার জন্য বলা হয়। ৩৬৫ দিবস অতিক্রম হওয়ার পরেও নতুন নেতৃত্বের মুখ দেখেনি পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগ।
পটুয়াখালীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলায় দীর্ঘ ১ বছর ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় নানা ধরনের আলোচনা – সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। তবে কমিটি নিয়ে কোন কথাই বলতে চায় না পদপ্রত্যাশী নেতারা।
কমিটি গঠন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে একাধিকবার কথা বলেছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এতে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। আমরা চাই পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগকে আরো বেগবান করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ পটুয়াখালী জেলাকে একটি নতুন কমিটি উপহার দিয়ে সংগঠনকে গতিশীল করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
পাশাপাশি জামায়াত-বিএনপির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে- এমন কেউ যাতে কোনোভাবেই ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান না পায় সেই দিকে সজাগ থাকতে হবে। অতি দ্রুতই পটুয়াখালীতে হাইব্রিডমুক্ত একটি নির্ভেজাল ছাত্রলীগ কমিটি গঠন করা হবে এবং সাথে সাথে পুনরায় ছাত্রলীগ আবার প্রান ফিরে পাবে- প্রত্যাশা করি আমরা।
বর্তমানে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বের আশায় কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকে তাঁকিয়ে রয়েছে জেলা ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতা কর্মীরা। জেলা ছাত্রলীগের কমিটি এখন নেতাকর্মীর প্রাণের দাবী।