বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জ: এবারে ৩ মাস ১৩ দিন পর খোলা হলো ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৮টি দান সিন্দুক। সেখানে পাওয়া টাকা গণনা করছেন ১৯৮ জন । তাদের ৬০ জন রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারি। অন্য ১৩৮ জন মাদ্রাসার ছাত্র।
এর আগে গত ৬ই মে এসব দানসিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন ১৯ বস্তা টাকা গণনা করে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এবার ২৩ বস্তা টাকা হওয়ায় টাকার পরিমাণ আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার) এর উপস্থিতিতে দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়।
এবার বড় বস্তায় ২৩ বস্তা টাকা হয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে টাকা গণনার কাজ। এবারও দান সিন্দুকে টাকা ছাড়াও স্বর্ণালংকার এবং বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গেছে।
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক হয়বতনগর জমিদার বাড়ির ঈসা খানের বংশধর দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর ‘পাগলা সাহেব’ নামক একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি নরসুন্দা নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে স্থানটিতে মসজিদটি নির্মত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারে মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
কারও কারও মতে ‘পাগলা সাহেব’ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদের কাছে স্থিত হন এবং তাকে ঘিরে আশেপাশে অনেক ভক্তকূল সমবেত হন। তার ইবাদত-বন্দেগির জন্য দেওয়ান পরিবারের পক্ষ থেকে পাগলা সাহেবের নিজের পছন্দের স্থান নরসুন্দা নদীর মাঝখানে টিলার ওপর একটি টিনের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই ঘরটি পরবর্তীতে ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
এই মসজিদের আয়ের একটা অংশ আশেপাশের অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক খাতে ব্যয় করা হয়। এ ছাড়া ২০০২ সালে মসজিদের পাশে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ক্যান্সার, কিডনি রোগে আক্রান্ত দরিদ্র ব্যক্তিদেরও এই তহবিল থেকে সাহায্য দেওয়া হয়। গতবছর করোনা চলাকালীন এই তহবিল থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক, যারা করোনা রোগীদের সেবায় কাজ করেছেন, তাদের অনুদান দেওয়া হয়েছে।