বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক রবিবার রেমিটেন্সের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তা পর্যালোচনায় দেখা যায়, নতুন বছরের তৃতীয় মাস এবং ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের নবম মাস মার্চে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩২৯ কোটি (৩.২৯ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। যা গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ৬৫ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ (প্রায় ২ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
এর আগে কোনও মাসেই ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসেনি। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি (২.৬৪ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল এক মাসে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
অর্থ পাচারে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ফলে হুন্ডি-সহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো কমে গেছে, বৈধপথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে। এ ছাড়া ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে পরিবার পরিজনের বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে বেশি বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যার কারণে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ কোটি ৬১ লাখ ডলার। গত বছরের মার্চে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত মার্চ মাসে তার আগের বছরের মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্সে ৬৪.৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলার।
রেমিট্যান্স আয়ের দিক থেকে ২০২৪ সালে বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশে সাড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
রেমিট্যান্স হলো দেশে ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশী মুদ্রা খরচ করতে হয় না বা কোনো দায়ও পরিশোধ করার দরকার পড়ে না। অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশী মুদ্রা খরচ করতে হয়। আবার বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের রিজার্ভ বা মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোয় ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তারা বলেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, তাও কিছুটা কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে। সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাসী আয় বছরের অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি আসে। তবে এবারের ঈদে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।