Home গাড়িবাজার অটোমোবাইল শিল্প নীতিমালা পুনর্বিবেচনার দাবি বারভিডার

অটোমোবাইল শিল্প নীতিমালা পুনর্বিবেচনার দাবি বারভিডার

 

ঢাকা: অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়নে সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালাটি দেশের বিদ্যমান শিল্পনীতি অনুসরণে হয়নি বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। একইসঙ্গে এ শিল্পের প্রসারে বাস্তবভিত্তিক, সম্মুখমুখী, ভারসাম্যপূর্ণ অটোমোবাইল নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

শনিবার (১৯সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন ও মোহাম্ম আব্দুল হামিদ শরীফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম সম্রাট  প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা লিখিত বক্তব্যে জানায়, প্রস্তাবিত অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালাটি দেশের বিদ্যমান শিল্পনীতি অনুসরণ করে তৈরি করা হয়নি; বরং এটি বিদ্যমান শিল্পনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

প্রস্তাবিত নীতিমালাটি দেশীয় গাড়ি নির্মাণের নামে একটি বড় রকমের স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। এসকেডি বিলুপ্ত করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজার ন্যূনতম ১ লাখ ইউনিট হলে নতুন গাড়ি শিল্প প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব বলে প্রস্তাবিত নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২০ হাজার ইউনিট গাড়ি বিক্রি হয়। এমন পরিস্থিতিতে কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানির জন্য এখানে সত্যিকারের অটোমোবাইল শিল্প স্থাপন কতটুকু টেকসই হবে তা বিবেচ্য বিষয়। এ ছাড়া সিকেডির ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে ৩০ শতাংশ যন্ত্রাংশ সংযোজনের শর্ত থাকা দরকার। বাংলাদেশের আমদানিকারকরা গাড়িভেদে সর্বোচ্চ ৮২৬ শতাংশ থেকে সর্বনিম্ন ১২৭ শতাংশ শুল্ক দিয়ে থাকেন। বারভিডা শুল্ক ও কর বাবদ যে অর্থ দেয় তা সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস। প্রস্তাবিত নীতিমালায় নতুন গাড়ির শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে আহরিত রাজস্বের আকার কেমন হবে তা বিবেচনায় রাখা জরুরি।

কোনো দেশি বা আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাংলাদেশে পূর্ণ শিল্প স্থাপনে আগ্রহী থাকলে তাদের জন্য বর্তমান শুল্ক ও কর হার এবং প্রণোদনা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দেওয়া রয়েছে। বিশ^মানের কোনো কোম্পানি বাংলাদেশে গাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপন করতে চাইলে বারভিডা তাকে স্বাগত জানায়। তবে শুধু অভ্যন্তরীণ বাজারের ওপর নির্ভর না করে সেই কোম্পানি যেন নিজেরা রপ্তানির ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয় সেটি বাঞ্ছনীয়। জাপানের রিকন্ডিশন্ড গাড়িগুলোর ইমিশন কন্ট্রোল স্ট্যান্ডার্ডস ইউরো ৫ মানদন্ড শর্ত পূরণ করে বলে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, চিলি ও ইউএইর মতো শিল্পোন্নত ধনী দেশও জাপানের রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির অনুমোদন দেয়। অন্যদিকে ভারত, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদিত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের গাড়িগুলো ইউরো ২ বা ৩ মানদন্ডের হয় এবং এসব গাড়ি জাপান থেকে আমদানিকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ির তুলনায় অনেক বেশি পরিবেশ দূষিত করে।

বারভিডা মনে করে, বাংলাদেশ যখন একটি উন্নয়নশীল এবং মধ্যম আয়ের দেশে গ্র্যাজুয়েশন হতে যাচ্ছে, তখন এ দেশের মোটরগাড়ি শিল্পের জন্য একটি বাস্তবভিত্তিক, ভারসাম্যপূর্ণ, সম্মুখমুখী ও বাস্তবায়নযোগ্য নীতিমালা থাকা বিশেষ প্রয়োজন, যার লক্ষ্য হবে দেশের নাগরিক ও ভোক্তাদের সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষা এবং কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ নিশ্চিত রেখে একটি প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি শিল্প প্রতিষ্ঠা করা। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই দেশে আগামী দিনের প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বমানের গাড়ি উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে।