বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: বন্দর পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রয়োজন বিরাজমান কন্টেইনার জট দ্রুত কমানো। বিশেষত যেসব ব্যাংকে আমদানি ঋণপত্র হয়েছে এক্ষেত্রে তাদেরকেও উদ্যোগী হতে হবে। বন্দর সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা প্রয়োজন ।
বন্দরের সংকট নিরসনে আজ মঙ্গলবার সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এই অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরউদ্দিন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শেখ মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর শফিউল বারী, কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রামের নির্বাহী পরিচালক একেএম মহিউদ্দিন আজাদ,বিএসটিআই পরিচালক মো. সেলিম রেজা, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমদ, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী, বার্থ অপারেটরস শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরস এন্ড টার্মিনাল অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফজলে ইকরাম চৌধুরী, বিজিএমইএর পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ প্রমুখ।
বিভিন্ন সংস্থার উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনীতি সচল রাখার জন্য প্রয়োজন বন্দরকে সর্বোচ্চ কার্যকর রাখা। কন্টেইনার ডেলিভারি জোরদার করে জট নিরসন করতে হবে। তবে, সবখানে করোনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত রেখে তা করতে হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শেখ মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্দরে কেন বর্তমান সসম্যা তা চিহ্নিত হয়েছে। সবার সমন্বিত সহযোগিতা পেলে বিরাজমান সমস্যা ৪ দিনে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম বলেন, ৯৮ শতাংশ কনটেইনার ট্রেড ও ৯২ শতাংশ কার্গো হ্যান্ডলিং করে চট্টগ্রাম বন্দর। শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, কাস্টম, রেলওয়ে, অফডকসহ ২০-২৫ ধরনের স্টেক হোল্ডার রয়েছে বন্দরের। করোনা পরিস্থিতিতে ডেলিভারি কমে গেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বন্দর সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ২৪ ঘণ্টা খোলা প্রয়োজন।
কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, আমার দফতর সার্বক্ষণিক খোলা। ব্যাংক বিকেল ৩-৪টা পর্যন্ত খোলা রাখলে আমদানিকারকদের সুবিধা হবে। বন্দরের জট কমাতে এগিয়ে আসতে হবে আমদানিকারকদেরকে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং সময় মাত্র দু’ঘণ্টার। শিপিং এজেন্ট অফিস ৩ ঘণ্টা খোলা। ব্যাংকের কাজ সেরে আমাদের এখানে এসে কেউ ডিও পায়নি এমন কোন অভিযোগ নেই। প্রকৃত সমস্যা হচ্ছে কুরিয়ার বন্ধ থাকায় সময় মত ডকুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে না, আর ডকুমেন্ট না পাওয়ায় ব্যাংকের কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। তাই প্রয়োজন অতিরিক্ত সময় ব্যাংক কার্যক্রম চালু রাখা। ব্যাংকসমূহকে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে ইকরাম চৌধুরী বলেন, শ্রমিকদের মজুরিসহ স্থির খরচ ঠিক থাকলেও ডেলিভারি কমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত কন্টেইনার তুলতে বা নামাতে পারছি না। আগে এক শিফটে কন্টেইনার নামতো সাড়ে তিন শ’ বক্স। সেটা বর্তমানে ১০ থেকে ৩০ বক্সের বেশি নয়। এভাবে কমে গেছে বার্থ অপারেটরদের কাজের ভলিউম। বলেন, যে কোনভাবে স্বাভাবিক করতে হবে ডেলিভারি।
সভায় যেসব সুপারিশ এসেছে সেগুলো মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং পরবর্তীতে আন্তঃ মন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রযোজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।