বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
বরিশাল: সন্তানের আশায় মানুষ কি না করে? তবে বৃদ্ধাশ্রমে মারা যাওয়া বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ চাঁদশী গ্রামের মৃত আবুল কাসেমের ছেলে এসএম মনছুরের (৭৫) শেষ বিদায় বেলাও আসেনি সন্তান বা রক্তের কোন স্বজনেরা।
রংপুরের হারাগাছ থানার বকসা বৃদ্ধাশ্রমের সদস্য সচিব নাহিদ নুসরাত (প্রাপ্তি রেজা) জানান, চলতি বছরের ২১ জুন রাত সাড়ে এগারটার দিকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে অসুস্থ অবস্থায় এক বৃদ্ধ ওই বৃদ্ধাশ্রমে আসেন। এরপর থেকে ওই বৃদ্ধ বৃদ্ধাশ্রমেই ছিলেন। রবিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে অসুস্থ হয়ে তিনি বৃদ্ধাশ্রমে মারা যান। পরবর্তীতে নিহতের লাশ তার গ্রামের বাড়ী গৌরনদীর চাঁদশীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
দক্ষিণ চাঁদশী গ্রামের কাজী আশিকুর রহমান রতন, কাজী বাবুল সহ স্থানীয়রা জানান, নিহত বৃদ্ধ এসএম মনছুর টিএন্ডটি বোর্ডের সাবেক সিনিয়র এ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। গত কয়েক বছর যাবত পরিবারের সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই। গত ছয়মাস পূর্বে রংপুরের হারাগাছ থানার বকসা বৃদ্ধাশ্রমে তার ঠাই হয়। রবিবার (৩০ অক্টোবর) ওই বৃদ্ধাশ্রমে সে (মনছুর) অসুস্থ হয়ে মারা যান। বৃদ্ধাশ্রম থেকে তার লাশ দক্ষিণ চাঁদশী গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে আসলে গ্রামের লোকজন লাশ গ্রহন করে সোমবার দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করেন।
তারা আরও জানান, ওই বৃদ্ধের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এরমধ্যে বড় ছেলে মহিন সরদার ঢাকায় চাকুরী করে ও ছোট ছেলে রাজু সরদার কাতারে অবস্থান করছেন। তারা কেউই বৃদ্ধের জানাজায় আসেননি। স্থানীয় এছাহাক কাজী অভিযোগ করে বলেন, ২০১৭ সালে মনছুর আহম্মেদ বিদেশ নেওয়ার কথা বলে এলাকা থেকে প্রায় ১৮ লাখ টাকা নিয়েছেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিলো।
নিহতের এক ঘনিষ্ট আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঢাকায় প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য মনছুর আহম্মেদের ছেলেরা ও বোন সেলিনা বেগম গত ১০ বছর পূর্বে তাকে মৃত দেখিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন। এরপর সে আর ওই বাসায় ফিরতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে বৃদ্ধের ছেলে মহিন সরদারের ০১৮২৭০৭০৭৪২ এবং বোন সেলিনার ০১৮২২৯৯২৩৭০ নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।