।। নাজমুল হোসেন।।
চট্টগ্রাম: এবারের বর্ষায় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমেদ।
বিজনেসটুডে২৪ কে বলেন, বর্ষা খুবই সন্নিকটে। নগরীতে এখন জলাবদ্ধতা নিরসনে কয়েকটি প্রকল্প চলমান। প্রকল্পের অধীন কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত সাতটি খালের মুখে ও ভেতরে বাঁধ দেয়া হয়েছে। এসব বাঁধের কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুত নামতে পারবে না। ফলে বর্ষায় জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়াও প্রত্যেকটা খালে যে ময়লার স্তুপ তা যদি ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণ না হয় তাহলে শহরে গলায় গলায় পানি হবে এবং চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ব্যাপক ক্ষতির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি বাকলিয়া, চান্দগাও, মুরাদপুর, ষোলশহর, চকবাজার, পাথরঘাটা এস্থানগুলো পানিতে ডোবার সম্ভাবনা আছে। আমি যথাযথ কতৃপক্ষকে অনুরোধ করব, যেন এই ব্যাপারে সজাগ থাকে। গেল বছর এবং এ বছর করোনার কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তার মাশুল দিতে না দিতেই আবার বর্ষায় বন্যার আশঙ্কা। এ যেনো মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

তিনি আরও বলেন, সিটি মেয়র মহোদয়কে এ বিষয়ে বেশ কয়েক দিন আগেই উদ্যোগ নিতে বলেছিলাম, উনি আমাকে বলেছিলেন ‘সিডিএ’ এর সাথে কথা হচ্ছে এবং চিন্তা করতে মানা করছেন কিন্তু গেল দুইদিনে বৃষ্টিতে তার কোন ফল চোখে পড়ে নি। ঈদের দিন অল্প বৃষ্টিতে শহরে যেভাবে পানি উঠেছে তা নিয়ে আমরা সত্যি শংকিত।
জানা গেছে, ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীরে সড়ক নির্মাণে আরেকটি প্রকল্পের কাজ চলছে।
এসব প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে পাথরঘাটার টেকপাড়া, কলাবাগিচা ও মরিয়ম বিবি খাল, ফিরিঙ্গিবাজারের ফিরিঙ্গিবাজার খাল, চাক্তাইয়ের চাক্তাই খাল এবং রাজাখালী খালে বাঁধ দেয়া হয়েছে। এগুলো কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালগুলো দিয়ে নগরের ১১টি ওয়ার্ডের পানি প্রবাহিত হয়ে নদীতে পড়ে। এসব এলাকায় প্রতি বছরই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এছাড়া রেগুলেটর (স্লুইস গেট) নির্মাণের জন্য মহেশখালেও বাঁধ দেয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। দোকানের কর্মচারীরাও দোকানে থাকবে না। ঠিক তখন যদি পানি উঠে যায় তাহলে কি অবস্থা হবে তা ধারণার বাইরে। ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
খাল খনন এবং দুই পাশে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণের জন্য সাময়িকভাবে এসব বাঁধ দেয়া হয়েছে বলে জানান সিডিএর প্রকৌশলীরা।
তাঁরা বলেন, খালের ভেতর থেকে পানি নদীতে নিষ্কাসনের জন্য বাঁধগুলোয় পাইপ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ২০টি খালে খননকাজ চলছে।
আরো জানা যায়, দিনে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হলেই চাক্তাই খালসহ আশপাশের খালে পানির উচ্চতা ৪ দশমিক ১ মিটার বেড়ে যায়। এতে প্রধান সড়কে ১ মিটারের উঁচু পানি জমে যায়। জোয়ার হলে তা আরও বাড়ে।
সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, খাতুনগঞ্জের এই আর্থিক ক্ষতির জন্য দায়ী আমরাই। চাক্তাই খাল দখল করে ও পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করেছেন ব্যবসায়ী বা প্রভাবশালীরা। এখন সবাই মিলে দখলদারদের উচ্ছেদ করার সময়।