Home আইন-আদালত ‘বলাৎকারও’ ধর্ষণ, জরিমানা ২০ লাখ টাকা

‘বলাৎকারও’ ধর্ষণ, জরিমানা ২০ লাখ টাকা

ঢাকা: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে জারি করা এ অধ্যাদেশে ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরির্বতন এনে নারী ও শিশুর পাশাপাশি কোনো ছেলে শিশুকে ‘বলাৎকার’ (অর্থ কোনো ছেলে শিশুর মুখ বা পায়ুপথে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত যৌনকর্ম)-কে ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে

এখন থেকে এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী বলাৎকারের ঘটনাও ধর্ষণ হিসেবে বিচার করা যাবে। এ ছাড়া অধ্যাদেশে আইনের ৪(১) ধারার পরিবর্তন এনে অর্থদণ্ড এক লাখ টাকার পরিবর্তে ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে।

নতুন এই অধ্যাদেশে ধর্ষণের তদন্ত ৬০ কার্যদিবসের স্থলে ৩০ কার্যদিবস এবং এ সময়ের মধ্যেও তদন্ত সম্পন্ন না হলে অতিরিক্ত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করার বিধান করা হয়েছে।

আইনের ১৮ (১) (ক) ধরায় বলা আছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।

আর ১৮(১)(খ) ধারায় বলা আছে, হাতেনাতে ধরা না পড়লে তদন্ত ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে। এ জায়গায় পরিবর্তন করে অধ্যাদেশে ৩০ কার্যদিবস করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮(২) ধারায় পরিবর্তন করে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘কোনো যুক্তিসংগত কারণে উপ-ধারা (১)-এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তদন্তকার্য সমাপ্ত করা সম্ভব না হইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে কেস ডায়েরিসহ বিলম্বের কারণ সংবলিত লিখিত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট উপস্থাপন করিবেন এবং ট্রাইব্যুনাল বা ম্যাজিস্ট্রেট সন্তুষ্ট হইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করিবেন।

তবে শর্ত থাকে যে, যেসব মামলার তদন্তে ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন সাপেক্ষে ডিএনএ পরীক্ষা আবশ্যক, সেসব মামলার তদন্তের মেয়াদ ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বর্ধিত করিতে পারিবে।’

অধ্যাদেশে ২৬(ক) নামে নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। নতুন এ ধারায় শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। আইনের ২৬(১) ধারায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের কথা বলা আছে। আর ২৬(ক)(১) ধারায় বলা হয়েছে , ‘২৬-এর উপ-ধারা (১)-এর বিধান সত্ত্বেও সরকার এই আইনের অধীন শিশু ধর্ষণ সংক্রান্ত অপরাধ বিচারের নিমিত্ত প্রত্যেক জেলায় ও মহানগর এলাকায় এক বা একাধিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করিতে পারিবে এবং এইরূপ ট্রাইব্যুনাল শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল নামে অভিহিত হইবে।’

২৬(ক)(২) ধরায় বলা হয়েছে, ‘একজন বিচারক সমন্বয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হইবে এবং সরকার জেলা ও দায়রা জজগণের মধ্য হইতে উক্ত ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিযুক্ত করিবে।’

এ ছাড়া আইনে নতুন ৩৫ ধারা যুক্ত করে যৌতুকের মামলাগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বাইরে বিচারের বিধান করা হয়েছে।

৩৫-এর (২) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘ধারা ১১-এর দফা (গ)-এ বর্ণিত অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণীয় (Cognizable), আপসযোগ্য ও জামিন-অযোগ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার, আপিল ও নিষ্পত্তিসহ পদ্ধতিগত সব ক্ষেত্রে এই আইনের অন্যান্য ধারার বিশেষ বিধানাবলির পরিবর্তে ফৌজদারি কার্যবিধি ও Evidence Act, 1872 (Act I of 1872)-এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।