*একটি কোড়লের দাম ৮-১০ টাকা
*প্রতিবাঁশে অর্থনৈতিক ক্ষতি ৮ থেকে ২০ গুণ
*বাঁশ উপযুক্ত হতে সময় লাগে ৬-১২ মাস
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
রাঙামাটি : বাঁশের কোড়ল বা চাড়া খাদ্য হিসেবে দেশের পাহাড়ি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বেশ প্রিয়।
বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষ আদি গোষ্ঠির অনুকরণে বাঁশকে খাদ্যে রূপান্তরের চেষ্টা চালাচ্ছি কেউ কেউ। এমনিতেই আদি গোষ্ঠির প্রিয় খাবারের তালিকায় বাঁশ কোড়ল থাকায় প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ বাঁশ শিশুবেলায়ই সাবাড় হচ্ছে।
পাহাড়ি অবাধে উজাড় হচ্ছে বাঁশবন। এতে শত শত কোটি টাকার প্রাকৃতিক বা বনজ সম্পদ মূলত কোনো কাজে আসছে না। তবে- আদিবাসিদের যাপিত জীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এই ধ্বংসাত্মক খ্যাদ্যাভাস কিছুটা হলেও মেনে নেয়া যেতে পারে।
কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদ ও প্রকৃতি রক্ষার যে স্লোগান দিনের পর দিন জারি আছে- উপযুক্ত হবার আগেই, শিশুবেলায়ই বাঁশচাড়া বা বাঁশের কোড়ল খেয়ে ধ্বংস করার যৌক্তিকতা ধোপে টেকে না।
একটি শিশু বা চাড়া বা কোড়লের দাম পাহাড়ে ১০/১২ টির আটি ৮০-১০০ টাকা। সে হিসেবে প্রতিটির দাম ৮-১০ টাকা। কিন্তু চাড়াবাঁশ বড় বা পূর্ণ বয়ষ্ক হলে এর প্রতিটির দাম পড়বে ৮০-২০০ টাকা। অর্থাৎ শিশুবেলায় বা উপযুক্ত হবার আগেই কোড়ল খেয়ে ফেলায় প্রতিবাঁশে আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে ৮ থেকে ২০ গুণ।
নতুন করে যদি বাঁশকে আমাদের সাধারণের খাদ্য তালিকায় জায়গা করে দেয়া হয় তবে পাহাড়ের বাঁশ উজাড় হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। সাবাড় হতে থাকবে বাঁশঝাড় সমূলে। বাঁশ কিন্তু প্রতিদিন বা প্রতিমাসে জন্মায় না। জন্মায় বছরে একবার মাত্র। আর উপযুক্ত হতে সময় লাগে আর ৬-১২ মাস।
‘বাঁশ কোড়ল খান এর গুণের শেষ নেই, পৃথিবীর সব চেয়ে সুস্বাদু খাবার বাঁশ কোড়ল’ -এই জাতীয় বিজ্ঞাপন নিয়ে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক সম্পদ ও প্রকৃতি ধ্বংসের অভিযোগ আনা উচিত।
প্রয়োজনে আইন করে এখনি বন্ধ করা উচিত বাঁশ সম্পদ ধ্বংস করার এই দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ড। তা না হলে- এক সময় হয়তো বাঁশ নিয়ে করা হাসি-তামাশাই হবে বাঁশসম্পদের কাল!