বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
বাগদাদে রাতভর ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এক শিয়া ধর্মগুরুর সমর্থকদের গুলির লড়াইয়ে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। শিয়া ধর্মগুরু মুকতাদা আল সদরের অনুগতরা রাষ্ট্রপতি ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। এরপরেই ইরাকি সেনাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয়। ইরাকের একাধিক শহরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ইরাকের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাগদাদে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বাগদাদে রাতভর গুলির লড়াই
শিয়া ধর্মগুরু সদর রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা করেন। তারপরেই তাঁর সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। বাগদাদে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সদরের অনুগামীদের গুলির লড়াই শুরু হয়। সারা রাত বাগদাদে গুলির লড়াই চলে। ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েক বছরে বাগদাদে সব থেকে বড় হিংসাত্মক ঘটনা। বাগদাদে গ্রিন জোনের কাছে এই গুলির লড়াই শুরু হয়। এই গ্রিন জোনেই ইরাকের সমস্ত সরকারি ভবন ও বিদেশী দূতাবাস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাগদাদে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
হিংসার ঘটনার তিন শতাধিক আহত
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, স্থানীয় চিকিৎসক সূত্রের খবর সদরের ১৫ জন সদস্যকে ইরাকের নিরাপত্তাবাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। এই হিংসার ঘটনায় প্রায় ৩৫০ জন আহত রয়েছেন। ইরাকের অন্তর্বর্তী প্রধানন্ত্রী তথা শিয়া ধর্মগুরু সদরের বন্ধু মুস্তাফা আল কাদিমি ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠক স্থগিত করেছেন। ইরাকের প্রভাবশালী ধর্মগুরুকে হিংসার ঘটনা বন্ধ করতে পদক্ষেপ করার আহ্বান করেছেন। অন্যদিকে, শিয়া ধর্মগুরুর প্রধান সহযোগী জানিয়েছেন, ইরাকে হিংসা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং অনুগামীরা অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ না করা পর্যন্ত অনশন করবেন।
শিয়া ধর্মগুরুর ঘোষণা
রবিবার ইরাকে শিয়াদের ধর্মগুরু সদর একটি ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি রাজনীতি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের কথা জানান। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইরাকে শিয়ার রাজনৈতিক নেতাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয়। পাশাপাশি তিনি বলেন, ইরাকের রাজনৈতিক সংস্কারে শিয়া নেতা ও দলগুলোকে স্বীকৃত দেওয়া হয় না। তাঁর এই ঘোষণার পরেই ইরাকের শিয়া সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। নিরাপত্তা হীনতায় ভুগতে থাকেন। সেখান থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ইরাকে রাজনৈতিক অস্থিরতা
গত অক্টোবর থেকে ইরাকে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। ইরাকের সাধারণ নির্বাচনে সর্বাধিক আসন পেয়েছিলেন সদর সমর্থিত প্রার্থীরা। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া জন্য ইরান সমর্থিত শিয়া গোষ্ঠীগুলো সরকার গঠন করতে পারে না। ইরাকের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো শিয়া রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করতে অস্বীকার করে। যার জেরে প্রায় এক বছর ধরে রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।