বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: নির্বাচনে বিজয়ী হলে পোশাক খাতের নতুন বাজার সম্প্রসারণে ৬ প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে স্বাধীনতা পরিষদ প্যানেল।
রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও-এ বিজিএমইএ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রতিশ্রুতির কথা জানান ‘স্বাধীনতা পরিষদ’র প্যানেল লিডার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস পৃথিবী থেকে কবে বিদায় হবে, আদৌ বিদায় হবে কিনা, এর প্রভাবমুক্ত হয়ে বিশ্ববাজার কবে স্বাভাবিক হবে তা অনিশ্চিত। এমনকি টিকা আসার পরেও সহসাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে তা কেউ বলতে পারবেন না। এমন বাস্তবতায় পোশাক খাত থেকে ২০২১ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় অর্জন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
এসব ব্যর্থতার দায় কেবল করোনা ভাইরাসের না। আমরা মনে করি না নেতৃত্বহীনতা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, আইনি সংস্কার করতে না পারায় অনেক গার্মেন্টস বন্ধের কারণ হয়ে থাকবে। একসময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মিলে প্রায় ৭ হাজার গার্মেন্টস ছিল, এটা কমতে কমতে এখন দুই হাজারের নিচে চলে এসেছে। এর জন্য দায়ী তথাকথিত কমপ্লায়েন্স, এটা নিয়ে বাড়াবাড়ির কারণে অনেক শিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। বড় এবং ছোট দু’ধরনের কারখানার জন্য দু’রকম নিরাপত্তা মান ঠিক করলে হয়তো কিছু শিল্প বেঁচে যেত। এমনকি আমরা ২০১৯ সালেই শ্রমিক আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, এটা আমাদের জন্য ভালো ফল বয়ে আনতে পারত।
তিনি আরও বলেন, এবারের নির্বাচন নিয়ে আপনারা অনেকেই জানতে চাইবেন কেন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমরা বিজিএমইএ’র নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেলে যে কাজগুলো করতে চাই সেগুলো শেয়ার করছি।
বিজয়ী হলে প্রথম কাজ হবে, আমাদের অন্যতম সংকট পণ্যের দাম নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। এর সুফল কিন্তু নিচ্ছেন ক্রেতা এবং বায়াররা। আমরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছি না। আমরা মনে করি বিজিএমইএ ইউডি ইস্যুর ক্ষেত্রে প্রডাক্ট কস্ট বিশ্লেষণ করে ন্যূনতম সিএম এর নিশ্চয়তা বিধান করতে পারে। এ কাজটি করতে পারলে আবারো শিল্প বিকাশ হবে, আমরা এটা করতে চাই।
দ্বিতীয়ত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য স্বতন্ত্র নিরাপত্তা মানদন্ড তৈরি করা হবে। তৃতীয়ত, শ্রম আইনের ধারাগুলো সংশোধন করে যুগোপযোগী শিল্পবান্ধব শ্রমনীতি তৈরি করা হবে। চতুর্থত, প্রত্যেক বায়ারের জন্য ইউনিফাইড কোড অব প্যাকটিস তৈরি করা হবে।
পঞ্চমত, নতুন বাজার সম্প্রসারণে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে আরএমজি উইং খোলা হবে এবং এই উইং থেকে পণ্যের ব্রান্ডিং, বায়ার সম্পর্কে তথ্য দেওয়া এবং বায়ারের সঙ্গে কোন মতবিরোধ হলে তার সমাধানে উদ্যোগী হওয়া।
ষষ্ঠত, ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, বন্ড লাইসেন্স, পরিবেশ লাইসেন্সসহ অন্যান্য সকল লাইসেন্সের মেয়াদ কমপক্ষে তিন বছর করা। বর্তমানে এসব লাইসেন্সের নবায়ন ফি এবং বিবিধ ফির নামে একটি ছোট কারখানা মালিককে যে পরিমাণ টাকা ব্যয় করতে হয়, প্রতিবছর তা নাহলে সে লাভজনকভাবে কারখানা চালাতে পারবে।
এবারের নির্বাচনে পুরো প্যানেল নিয়ে নির্বাচন করার আশাবাদ ব্যক্ত করে স্বাধীনতা পরিষদ’র প্যানেল লিডার বলেন, এবার ভোটের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। আমাদের প্যানেল নির্বাচনে থাকবে, ঢাকার ২৬ পদে আমাদের প্রার্থী থাকবে। এবার চট্টগ্রাম থেকেও আমরা প্রার্থী দেবো, ইতোমধ্যে সেখান থেকে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন।
এসময় প্যানেলের অন্যান্য সদস্যদের পরিচয় করে দেন তিনি।