বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
রাজবাড়ী: আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহরিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল। চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানার বড় দুধপাতিলা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে। মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাটোর থেকে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের টার্গেট করে বুলবুল একে একে করেছেন অন্তত ৬টি বিয়ে। হাতিয়ে নিয়েছেন এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এছাড়া চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা করেও হাতিয়ে নিয়েছেন বড় অঙ্কের অর্থ। শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানান, রাজবাড়ী পুলিশ সুপার (এসপি) জি এম আবুল কালাম আজাদ।‘
পুলিশ সুপার জানান, পাংশা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফজর আলী র্যাব-৫ এর সহযোগিতায় পাংশা মডেল থানার মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের মামলায় আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহরিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুলকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নাটোর জেলা সদর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় ৪টি প্রতারণার মামলা এবং ১টি চোরাচালানের মামলা রয়েছে। দামুড়হুদা থানায় ২টি ওয়ারেন্ট রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সরকারী অডিট অফিসার হিসেবে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, যশোর, পাবনা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন থানা অঞ্চলে দায়িত্বে আছে বলে পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে করে। এভাবেই রাজবাড়ীর পাংশায় এক মেয়েকে (১৭) বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে গত ৪ মার্চ প্রতারণামূলকভাবে বিবাহ করে। তাকে ধর্ষণ করে। গত ২৭ আগস্ট তাকে ফরিদপুর শহরস্থ রথখোলা যৌনপল্লীতে নিয়ে পাচারের চেষ্টা করে। এর আগে তার বসতঘর থেকে বিভিন্ন স্বর্ণ অলংকার ৫ লাখ ৭০ টাকা এবং নগদ ৮ লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়া গত ৭ মার্চ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত পাংশা মডেল থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে সরকারী কর্মকর্তার পরিচয়ে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাত জনের কাছ থেকে ২৩ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে।
বুলবুল সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেন, তিনি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য পরিদর্শক ছিলেন। তাঁর পোস্টিং চুয়াডাঙ্গায় হলেও তিনি প্রেষণে ঢাকায় স্বাস্থ্যের প্রধান কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নিয়োগে তিনি চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা দেন ঘুষ দেন। ঘুষ আদান–প্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে তিনি ৯ লাখ টাকা কমিশন পেয়েছেন। পরে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়। সবাই তাঁর কাছে টাকা ফেরত চান। তিনি সেই টাকা পরিশোধের জন্য একের পর এক বিয়ে করে টাকা হাতানোর কৌশল নেন। বিয়ের পর সেই পরিবারের সদস্য ও পরিচিতদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিতেন। সেখান থেকে সটকে পড়ে আবার বিয়ে করে একই কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেন। এভাবে ৬ টি বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।