আজ বৃহস্পতিবার, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সুরক্ষিত বিশ্ব, নিশ্চিত স্বাস্থ্য’। দিবসটির উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’ পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন, স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। স্বাস্থ্যখাতের সব শাখায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগের ফলে সামগ্রিভাবে দেশের স্বাস্থ্যসূচকে বিস্ময়কর উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও নিয়োগ, অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সংগ্রহ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশের চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মানুষের গড় আয়ু যেমন বেড়েছে, তেমনি কমেছে ‘মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার’।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন যে, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির সফল প্রয়োগের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে জাতিসংঘ থেকে সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। মা ও শিশুদের টিকা প্রদানের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার নানামুখী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বৈশ্বিক অঙ্গীকারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবার সকল স্তরে এসব সেবাকে জনগণের জন্য আরও সহজলভ্য ও গ্রহণযোগ্য করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে আবদুল হামিদ প্রত্যাশা করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে স্বাস্থ্যখাতে সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চরম রক্তক্ষয়ী ও প্রাণঘাতী অভিজ্ঞতার ফলে বিশ্বের প্রায় সব রাষ্ট্রই একমত হয়ে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৪৫ সালে আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘ গঠন করে। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পরের বছর ১৯৪৬ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রূপরেখা তৈরির জন্য একটি অন্তর্বতীকালীন কমিশন গঠন করা হয়। অন্তর্বতীকালীন এই কমিশনের মতামতের আলোকে ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল গঠন করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস বলে নির্ধারিত হয়। প্রতিবছর সংস্থাটি এমন একটি স্বাস্থ্য ইস্যু বেছে নেয়, যা বিশেষ করে সারা পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সেদিন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় এ দিবসটি।