Home আন্তর্জাতিক বিষে বিষে বিষক্ষয়

বিষে বিষে বিষক্ষয়

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

কথায় আছে বিষে বিষে বিষক্ষয়। আর এই মুহূর্তে গোটা পৃথিবী জুড়ে সবথেকে ভয়ঙ্কর বিষ যেটি ছড়িয়ে আছে সেটি হল করোনাভাইরাস। মানব সভ্যতা থেকে দুটো বছর কেড়ে নিয়েছে এই অতিমারি ভাইরাস। তবে অবশেষে এবার বোধহয় একেবারে জন্য নিষ্পত্তি পাওয়া যাবে এই মারণ ভাইরাস থেকে। বাঁদুরের দেহ থেকে যেই ভাইরাসের সৃষ্টি এবার সেই ভাইরাসের জনন রুখে দেবে এক বিশেষ প্রজাতির সাপের বিষে থাকা একটি উপাদান। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘মলিকিউলস’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে সম্প্রতি এই দাবিই করলেন ব্রাজিলের কয়েকজন গবেষক।

সাপের বিষ যেমন প্রাণঘাতী ঠিক তেমনই আবার অন্যদিকে জটিল রোগের নিরাময় সম্ভব এই বিষের দ্বারা। আর সে কারণেই দীর্ঘদিন ধরে সাপের বিষ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন বিশ্বের গবেষকেরা। ব্রাজিলের সাও পাওলোর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক বিশেষ এক প্রজাতির সাপ নিয়ে চালাচ্ছিলেন গবেষণা। বিশেষ প্রজাতির সাপের দেখা মেলে ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আমেরিকার অরণ্যে। প্রায় 6 ফুট দীর্ঘ মারাত্মক বিষধর সাপের নাম জারারাকুস্‌সু পিট ভাইপার। করোনা মোকাবিলায় এই সাপকে নিয়েই চলছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

করোনাভাইরাস প্রাণিকোষে প্রবেশের পর নিজের সংখ্যা বৃদ্ধি করেই সংক্রমণ ছড়ায়। গবেষণায় পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল এই সাপের বিষে থাকা উপাদান করোনাভাইরাসের জননকে অন্তত ৭৫শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। এই পরীক্ষাটি করা হয়েছিল বাঁদরের কোশে। যাতে অত্যাধিক সাফল্য পেয়েছিলেন গবেষকরা। গবেষকেরা জানিয়েছিলেন, পিএল প্রো নামে একটি উৎসেচক প্রাণীকোশের ভিতর করোনা ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সেই উৎসেচকের সঙ্গেই নিজেকে জুড়ে দিতে পারে ওই সাপের বিষে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিডের একটি শৃঙ্খল। আর তাতেই করোনার কেল্লাফতে।

তবে এখনই এই গবেষণা নিয়ে বিশেষ আশা দেখাচ্ছেন না গবেষকরা। কারণ সাপের বিষ বলে কথা! তাই নিবন্ধটির লেখক গবেষক রাফাল গুইডো এবং জুসেপি পুওর্তো আগেভাগেই সাবধান করে রাখছেন যে, বিষয়টা এতটাও সোজা নয়। মানুষের শরীর এই সাপের বিষ কতখানি সহ্য করতে পারবে, আদেও পারবে কিনা সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। আর তাই ভাবতে হচ্ছে কিভাবে এই বিষটিকে প্রয়োগ করা যায়। তবে বিজ্ঞানীরা আরেক ধাপ এগিয়ে ভাবছেন। গবেষকদের এখন আগামী ভাবনা, কিভাবে শরীরে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করার আগেই তাঁকে রুখে দেওয়া যায়। কারণ কথায় আছে ‘প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর’।