Home Second Lead বীজ উৎপাদন করে ভাগ্যের পরিবর্তন

বীজ উৎপাদন করে ভাগ্যের পরিবর্তন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

রংপু্র: সবজি বীজ উৎপাদন করে ভাগ্য বদলেছে পীরগাছা উপজেলার পাঁচ শতাধিক কৃষকের। কয়েক বছর আগেও যারা অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করতেন, তারাই আজ গ্রীষ্মকালীন সময়ে আবাদ করে অর্থনৈতিকভাবে ভাগ্যের পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন।

অধিক লাভের আশায় প্রতিবছর অন্য ফসল আবাদ ছেড়ে বীজ আবাদের দিকে ঝুঁকছেন স্থানীয় অনেক কৃষক।

পীরগাছা উপজেলাধীন পারুল ইউনিয়নের ছিদাম এলাকাসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্তজুড়ে সবজির মাঠ। এসব মাঠে বাঁশের মাচা করে করলা, ঝিংগা, চিচিঙ্গা, লাউ, বরবটি আর মিষ্টি কুমড়ারসহ আরও কয়েক প্রকার সবজি চাষ করছেন ওই এলাকার অধিকাংশ কৃষক। আর এই ভরা মৌসুমে প্রচণ্ড রোদেও ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

বিএডিসির একজন সফল বীজ উৎপাদন চাষি মনতাজুর রহমান জিল্লাল জানান, গত ১৩ বছর ধরে বীজ উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এবারও তিনি এক একর হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া, তিন একর লাউ আর দেড় একর করলার বীজ উৎপাদন করেছেন। মিষ্টি কুমড়া একরে ৫০-৫৫ কেজি উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানান তিনি, যার ক্রয় মূল্য প্রতি কেজি ৮-১০ হাজার টাকা দরে প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি টাকা। এছাড়াও করলা আর লাউয়ে একর প্রতি দেড় লাখ টাকা করে লাভের স্বপ্নও দেখছেন কৃষক জিল্লাল।

বীজ প্রস্তুতকালে জিয়াউর জানান, এবার এই জমিতে প্রায় ৩০০ কেজি বীজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৮০০ টাকা কোম্পানির ধরে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পাওয়ার স্বপ্ন তার। খরচ হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার টাকা।

জানা যায়, এসব চাষিকে বিএডিসির পাশাপাশি লালতীর, সুপ্রিম সিড, মেটাল, এসিআই, ম্যাকডোনাল্টসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভিত্তি বীজ দিয়ে তাদের ফিল্ড সুপারভাইজার ভাইজার দ্বারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পরবর্তী সময়ে উৎপাদিত বীজগুলোর গুণগত মান নির্ণয় করে কোম্পানি ক্রয় করে নেন। কেনা বীজের মূল্য শর্তসাপেক্ষে জমাদানের ছয় মাসের মধ্যে কৃষককে পরিশোধ করে কোম্পানি বা ওই প্রতিষ্ঠান।

রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান বলেন, উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি বীজ উৎপাদন ভবিষ্যতে ভালো ফলনের সহায়ক। কৃষকরা এই বীজ উৎপাদন করে একদিকে লাভবান হচ্ছেন যেমন, অন্যদিকে বাজার বা দেশে ভালো মানের বীজেরও নিশ্চয়তা বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, দিন দিন রংপু্র জেলায় সবজি চাষাবাদ বাড়ছে। সেইসঙ্গে সবজি বীজ উৎপাদনকারী কৃষকের সংখ্যাও বাড়ছে। এসব কৃষকের তালিকা করে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষে পোকামাকড় থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।