Home Uncategorized `বেদের মেয়ে জ্যোত্‍স্না’ এখন কোথায় ?

`বেদের মেয়ে জ্যোত্‍স্না’ এখন কোথায় ?

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

নব্বইয়ের দশকে পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে, উৎসবে ফুল ভলিউমে বাজতো একটি গান ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না আমায় কথা দিয়েছে, আসি আসি বলে জ্যোৎস্না ফাঁকি দিয়েছে…।’ সেই গানে প্লে ব্যাক করেছিলেন, অ্যান্ড্রু কিশোর আর রুনা লায়লা। তবে সুর ছিল—‘এক পরদেশি মেরা দিল লে গায়া’ গান থেকে অনুপ্রাণিত। সেই গানটি ছিল বেদের মেয়ে জ্যোত্‍স্না’ ছবির। ছবিটি বাংলাদেশ ও ভারতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল।

সেই নব্বইয়ের বেদের মেয়ে ওরফে হিরোইন অঞ্জু ঘোষকে মনে আছে কি! তিনি এখন কোথায়, কী করছেন আজকাল!

বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না আগে মুক্তি পেয়েছিল বাংলাদেশে। সিনেমার নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং নায়িকা অঞ্জু ঘোষ। বাংলাদেশে বিপুল সাড়া পাওয়ার পর ভারতে তার রিমেক করেন তোজাম্নেল। তবে এ বার নায়ক বদলে যায়। ইলিয়াস কাঞ্চনের পরিবর্তে চিরঞ্জিৎ।

মজার কথা, সেই চিরঞ্জিৎ ওরফে দীপক চক্রবর্তী এখন তৃণমূলের বিধায়ক। আর অঞ্জু ঘোষ তথা সেই বেদের মেয়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে।

উনিশের লোকসভা ভোটের পর পরই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অঞ্জু। ইদানীং তাঁকে অবশ্য বিশেষ দেখা যাচ্ছে না। কেন যাচ্ছে না, তার সদুত্তরও নেই বিজেপির কাছে। তবে খাতায়কলমে তিনি গেরুয়া শিবিরেই রয়েছেন।

অঞ্জু ঘোষ বিজেপিতে যোগ দিতেই দুই বাংলায় তীব্র বিতর্ক হয়েছিল। উনিশের ভোটে তৃণমূলের হয়ে প্রচার করার জন্য রানি রাসমণির নায়ক নূর এবং ফিরদৌসকে কালো তালিকাভুক্ত করে দেশে পাঠিয়েছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়। তারপর অঞ্জুর বিজেপিতে যোগদানের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায়।

পশ্চিমবঙ্গে ‘বেদের মেয়ে জ্যোত্‍স্না’-র শব্দবন্ধের রাজনৈতিক ব্যবহারও হয়েছিল। একবার এক নেতাকে তরমুজ বলে কটাক্ষ করেছিলেন এক নেত্রী। উপরটা সবুজ, ভিতরটা লাল। সেই নেতা তখন কংগ্রেসে ছিলেন। তিনি পাল্টা বলেছিলেন ‘বেদের মেয়ে জ্যোত্‍স্না’!
বাংলার রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জ্যোৎস্না।

বাধীনতার আগে অঞ্জু ঘোষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভোলানাথ অপেরার হয়ে যাত্রায় নৃত্য পরিবেশন করতেন ও গানও গাইতেন। ১৯৮২ সালে এফ, কবীর চৌধুরী পরিচালিত ‘সওদাগর’ সিনেমার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। এই ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল ছিল। তিনি বাংলার নীলো নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে তার ক্যারিয়ার বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও তিনি ফিরে আসেন ভালোভাবে। ১৯৮৭ সালে অঞ্জু সর্বাধিক ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৯ সালে তার অভিনীত বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না অবিশ্বাস্য রকমের ব্যবসা করে এবং সৃষ্টি করে নতুন রেকর্ড। চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে তার গাওয়া ১২টি গান নিয়ে ‘মালিক ছাড়া চিঠি’ নামের একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান এবং কলকাতায় চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে থাকেন। ২০১৮ সালে, তিনি সাইদুর রহমান সাইদ পরিচালিত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র, মধুর ক্যান্টিনে অভিনয় করেন।