Home Second Lead ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ১৫ কোম্পানির দর অভিহিত মূল্যের নিচে

ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ১৫ কোম্পানির দর অভিহিত মূল্যের নিচে

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫টি কোম্পানির লেনদেন গত ১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলোর শেয়ার ফেসভ্যালু বা অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে লেনদেন হচ্ছে।

ডিএসই ‍সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ব্যাংক খাতে মোট ৩০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি বা ২০ শতাংশ কোম্পানির লেনদেন ১০ টাকার নিচ্ছে হচ্ছে। আলোচ্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- এবি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড।

অন্যদিকে আর্থিক খাতে মোট ২৩টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি বা ৩৯ শতাংশ কোম্পানির লেনদেন অভিহিত মূল্যের নিচে। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- বিআইএফসি, ফারইস্ট ফিন্যান্স, ফ্যাস ফিন্যান্স, ফার্স্ট ফিন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফিন্যান্স সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড, প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড।

ডিএসইর তথ্য মতে, ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে গত ১ বছরে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে এবি ব্যাংকের। গত বৃহস্পতিবার এই শেয়ারটি সর্বশেষ ৭ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। আর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শেয়ারটি সর্বোচ্চ ১৩ টাকা ৭০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। একইভাবে আলোচ্য সময়ে এক্সিম ব্যাংক সর্বনিম্ন ৯ টাকা ৯০ পয়সা লেনদেন হয়। বছরের শুরুতে শেয়ারটি সর্বোচ্চ ১৪ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়আলোচ্য সময়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সর্বনিম্ন ৯.৬০ পয়সা, সর্বোচ্চ ১৩ টাকা ৫০ পয়সা, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক সর্বোনিম্ন ২.৮০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৫ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংক সর্বনিম্ন ৯.৮০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১৬. ৪০ পয়সা, ন্যাশনাল ব্যাংক সর্বনিম্ন ৮ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২ টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক সর্বনিম্ন ৮. ৬০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১৩.২০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

অন্যদিকে আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ৯টির অবস্থা খুবই নাজুক। সাম্প্রতিক সময়ে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অবসায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানটিকে অবসায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিতে অবসায়কও নিয়োগ করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে অনেক আমানতকারী তা ফেরত পাচ্ছেন না। কোম্পানিটিকে অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর গত জুলাই মাস থেকে

পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে এ খাতের অন্যান্য শেয়ারের দামেও। স্বাভাবিকভাবে এ সময়ে সবচেয়ে বেশি কমেছে অবসায়নের প্রক্রিয়ায় থাকা পিপলস লিজিংয়ের দাম। লেনদেন বন্ধের আগে পিপলস লিজিং সর্বশেষ ৩ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার বিআইএফসি সর্বশেষ ২ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে শেয়ারটি ৮.১০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। আলোচ্য সময়ে ফারইস্ট ফিন্যান্স সর্বনিম্ন ২.৮০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৭ টাকা ৮০ পয়সা, ফার্স্ট ফাইন্যান্স সর্বনিম্ন ৩.৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৮.২০ টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সর্বনিম্ন ৬ টাকা ও সর্বোচ্চ ১৭.৭০ টাকা, প্রিমিয়ার লিজিং সর্বনিম্ন ৭.১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১৪.২০ টাকা, প্রাইম ফাইন্যান্স সর্বনিম্ন ৬.৫০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১১.৪০ টাকা, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল সর্বনিম্ন ৬.৬০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১৭.৫০ টাকা দরে লেনদেন হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এ ছাড়া আর্থিক বেশ কিছু ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনাও ঘটেছে এ সময়ের মধ্যে। এ কারণে ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানির মধ্যে অনেকগুলোর আর্থিক অবস্থার বেশ অবনতি ঘটেছে। পাশাপাশি এ খাতের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থায়ও বড় ধরনের চিড় ধরেছে, যার নেতিবাচক প্রভাব এ দুই খাতের শেয়ারের দামে পড়ছে। এখনো বাজার মূলধন ও লেনদেনে ব্যাংক ও লিজিং খাতের প্রভাব অনেক বেশি। তাই এসব খাতের শেয়ারের দাম কমলে তার নেতিবাচক প্রভাব সামগ্রিকভাবে বাজারে ওপরও পড়ে।