Home সারাদেশ বিলুপ্তির পথে রংতুলিতে লেখা ব্যানার

বিলুপ্তির পথে রংতুলিতে লেখা ব্যানার

ধুনট (বগুড়া) থেকে সংবাদদাতা : ডিজিটাল সাইনবোর্ডের প্যানা-ব্যানারের যুগে বগুড়ার ধুনট উপজেলাসহ আশপাশের এলাকায় রং-তুলি চিত্রশিল্পীরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রং-তুলি পেশাজীবীরা এখন প্রায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

বর্তমানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যানার লিখন ছড়িয়ে পড়েছে শহরসহ গ্রামের আনাচে কানাচে। ফলে এখন আর সহসায় চোখে পড়ছেনা দেয়ালে কাপড় টাঙিয়ে রঙ-তুলি দিয়ে ব্যানার লিখনসহ বিভিন্ন স্থানে আঁকাআঁকি। দেয়াল লিখনের পরিবর্তে শোভা পাচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যানার। আর এভাবেই বিলুপ্তির পথে রং তুলিতে ব্যানার লেখার চর্চা। নানা প্রতিকূলতা মাড়িয়ে রফিকুল ইসলাম নামে এক চিত্রশিল্পী তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে রেখেছেন হাতে লেখা ব্যানার, সাইনবোর্ড লিখন।

চিত্রশিল্পীরা সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, দেয়াললিখন ও বিভিন্ন ছবি এঁকে আয়-রোজগার করতেন। তবে এলাকায় ডিজিটাল মেশিন স্থাপন হওয়ার পর থেকে চিত্রশিল্পীদের হাতে রং করার কাজে ভাটা পড়েছে। ধীরে ধীরে মানুষ হাতে রঙের কাজ ছেড়ে দিয়ে ডিজিটাল মেশিনের কাজে ঝুঁকে পড়েন। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ডিজিটাল নির্ভর কর্মক্ষেত্রে সাইনবোর্ড, ব্যানার লেখার কদর দিন দিন কমে যাওয়ায় হারাতে বসেছে রঙ-তুলির আঁচড়ের মাধ্যমে চারু শিল্পীদের চির চেনা পেশা। এক সময় শিক্ষিত যুব সমাজের সম্মানের সঙ্গে এ পেশায় জীবিকা নির্বাহ করতো। এখন ডিজিটাল ব্যানারের ব্যবসা ভালো হওয়ায় নতুন করে কেউ এ পেশায় আসছেন না। এ উপজেলায় ২০-২৫ জন এ পেশার সঙ্গে জড়িত ছিল। বর্তমানে তাদের বেশির ভাগই আর কাজ করছেন না।

রঙ-তুলি পেশার সঙ্গে জড়িত রফিকুল ইসলাম জানান, এক সময় সরকারি অফিসের সব সাইনর্বোড, ব্যানার লিখতাম। সকাল থেকে রাত অবধি বিভিন্ন দিবসসহ নানান সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে কাজ করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল ব্যানারের প্রভাবে সাইনর্বোড, ব্যানার লিখনের কাজ তেমন একটা আসে না বললইে চলে। তাই আমরা এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছি।

ডিজিটাল মেশিনে সাইনবোর্ডের প্যানা তৈরি করতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখন কি আর হাতে লিখে সাইনবোর্ড বানানোর যুগ আছে। কম্পিউটারে ডিজাইন করে আধা ঘণ্টায় পেলাম নিজের ও প্রতিষ্ঠানের দ্রব্যাদির ছবি দিয়ে চার কালারের সাইনবোর্ড। হাতে করা রং-তুলি দিয়ে এই সাইনবোর্ড তৈরি করলে আমার মনে হয় ১৫ দিনেও তা সম্ভব হতো না।