বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে এরপর কে বসবেন তা নিয়ে চলছে নতুন জল্পনা চলছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গদিতে যেই বসুন না কেন, আগামীর কাজটা তাঁর জন্য খুব একটা সহজ হবে না। বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে।
অর্থনৈতিক সংকট: বাইশ কোটির এই দেশের অর্থনীতি টালমাটাল। বলতে গেলে গলা অবধি ঋণে ডুবে আছে । ঋণের পরিমাণ ১৩০ বিলিয়ন ডলার। সেই সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি যেন রকেটের গতি নিয়েছে (১২ শতাংশ)। বিগত তিন বছর ধরে পাকিস্তানের অগ্রগতিতে স্তব্ধ করে রেখেছে এই ধরনের কিছু প্রকট সমস্যা। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ইকোনমির ভাইস চ্যান্সেলর নাদিমুল হক বলেছেন, আমাদের দেশের অর্থনীতি দিকভ্রান্ত হয়েছে। বড়সড় কোনও পরিবর্তিত নীতি গ্রহণ না করলে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া দুষ্কর।
জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত:পাকিস্তানের সঙ্গে জঙ্গি, নাশকতা শব্দগুলো গত কয়েক দশক ধরে সমান্তরাল হয়ে গিয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে জঙ্গি কার্যকলাপ থামার কোনও লক্ষণ নেই, বরং দিন দিন তা বাড়ছে। জঙ্গি দমে আদ্যোপান্ত ব্যর্থ পাকিস্তান। গত কয়েক মাসে পাকিস্তানে তালিবান কার্যকলাপও বেড়েছে হু হু করে। যে তালিবান আফগানিস্তানের সরকার দখল করেছে তারই অংশ মাথা চারা দিচ্ছে পাকিস্তানেও। দেশের খনিজসমৃদ্ধ প্রদেশ বালুচিস্তান। জঙ্গিরা সেই প্রদেশে দিন দিন স্বতন্ত্র হয়ে উঠছে। আরও বেশি করে তারা সেখানে ক্ষমতা, স্বাধীনতা দাবি করছে। এই সমস্যার কোনও হাতেগরম সমাধান নেই নতুন পাক সরকারের কাছেও।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: পড়শি দেশ তথা বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নতুন সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। তার উপরে দেশের হিতাহিত নির্ভর করবে অনেকখানি। ইমরান খান দাবি করেছেন বিরোধীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তাঁর পতন সুনিশ্চিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আমেরিকার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের বুনিয়াদ তলানিতে ঠেকেছে। তা ফের পুনরুদ্ধার করার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে নতুন সরকারকে, যা খুব একটা সহজ হবে না।
রাশিয়া যেদিন ইউক্রেন আক্রমণ করে, ঠিক সেই দিনই মস্কো গিয়েছিলেন ইমরান খান, রাশিয়ার নীতির প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে, এছাড়া বেজিং উইন্টার অলিম্পিক্সেও গিয়েছিলেন ইমরান, যা পশ্চিমের দেশগুলোতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাড়তি ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে সময় লাগবে।
পাকিস্তানে ইমরান পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে কে বসবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে এগিয়ে আছেন সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা শাহবাজ শরিফ। ভোটাভুটিতে ইমরানের হারের পর যিনি বলেছেন, পাকিস্তানে আবার সুদিন ফিরতে চলেছে। এখন দেখার সেই সুদিন কে কেমনভাবে ফিরিয়ে আনে।